উলিপুর-চিলমারী রেলপথ সংস্কার প্রকল্পের শুরুতেই অনিয়ম
প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত রেলপথ উন্নয়নের প্যাকেজ প্রকল্পের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দরপত্রের শর্তানুযায়ী বাইরে থেকে মাটি এনে রেলপথের দুই ধারে মাটি ফেলার কথা থাকলেও রেলপথের কাছ ঘেঁষে মাটিকাটা হয়েছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনতে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ। রেলওয়ে সূত্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে চিলমারী উপজেলার রমনা স্টেশন পর্যন্ত ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার রেলপথের উন্নয়ন প্যাকেজ প্রকল্পের কাজ পায় ঢাকার বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ৯ হাজার ৫৩৭ টাকার প্যাকেজ প্রকল্পের মধ্যে মাটির কাজ ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। দরপত্রের শর্তানুযায়ী রেলের জায়গা থেকে মাটি কাটলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রতি ঘনফুট মাটিতে টাকা পাবে ২৩৩ টাকা। বাইরে থেকে আনলে প্রতি ঘনফুট মাটিতে ৬৬৬ থেকে ৭৬০ টাকা পাবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বাইরে থেকে মাটি কিনে এনে রেলপথের দুই ধারে ফেলবে শর্তে রেল বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি প্রতি ঘনমিটার মাটিতে ৬৬৬ টাকা পাবে। প্রকল্প এলাকার রেলপথ ঘুরে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিক দিয়ে রেলপথের কাছ ঘেঁষে দৈনিক ৪০০ টাকার মজুরির ভিত্তিতে মাটি কাটছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃক নিয়োগকৃত শ্রমিক সর্দার আশরাফুল ইসলাম পুরো রেলপথ এভাবে মাটি কাটা হয়েছে বলে জানান। রেলের অনিয়মের ব্যাপারে রেল-নৌ, 'যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, 'এ রকম দুর্নীতিগ্রস্ত কাজের দায় পড়ে জনগণের ঘাড়ে। অন্যদিকে সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। অতীতে এই রকম দুর্নীতি হওয়ায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। চুক্তিতে যেভাবে আছে সেভাবেই কাজ করা হোক। জনগণের টাকা লুট হতে পারে না।' এ বিষয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন) মো. আরিফুজ্জামান বলেন, কুড়িগ্রামে কোনো উন্নয়ন কাজ হচ্ছে কিনা এটা তার জানা নেই। অনিয়ম কীভাবে হচ্ছে, কতটুকু হচ্ছে সেটা তদন্ত না করা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন জানিয়ে তিনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, 'রেলের উন্নয়ন কাজে অনিয়মের কথা শুনেছি। তাদের অনিয়মে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার আমার নেই। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য লিখব।'