মাঘের কনকনে শীতকে উপেক্ষা করেই বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলার কৃষকরা। শীতের সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে হাল-চাষ, জমির আইল নির্মাণ, সেচ, চারা রোপণ ইত্যাদি কাজ। তবে মৌসুম অনেকটা শেষের দিকে হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। এখনো কেউ কেউ জমিতে সার-গোবর দিচ্ছেন, কেউ শ্রমিকদের তদারকি করছেন, আবার কেউ চারা রোপণ করছেন। শীতের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে চলছে কৃষকদের এসব ব্যস্ততা।
জানা গেছে, অন্য বছরের তুলনায় এবার উপজেলায় কয়েকগুণ বেশি জমিতে বোরো চাষ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমনের পাশাপাশি বোরো আবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা।
চলতি মৌসুমে শীতে বীজ তলার তেমন ক্ষতি না হওয়ায় জমিতে চাষাবাদ ঠিক মতো করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বোরো মৌসুমে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কৃষি অফিস।
তবে মৌসুমের সময় প্রায় শেষ পর্যায়ে গেলেও মূল লক্ষ্যমাত্রা- ৭ হাজার ৯১০ হেক্টরের মধ্যে এ পর্যন্ত অর্জন- ৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর (গত শনিবারের দেওয়া তথ্যমতে)। কৃষি অফিস বলছে ফটিকছড়িতে বেশ কিছু জায়গায় দেরিতে বীজতলা এবং বোরো ধান লাগানো শুরু হয়েছে। তাই একটু দেরি হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৮ হাজার বা সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর পর্যন্ত আবাদ হবে বলে আশ্বাস তাদের।
সরেজমিনে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে, এখনো উপজেলার বিভিন্ন স্থানের কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ফসলের ক্ষেতে। শীত উপেক্ষা করে ধানের চারা রোপণ করছেন। ধানের চারা রোপণে স্থানীয় কৃষকরা দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিক এনেও কাজ করছেন ফসলের ক্ষেতে। উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর জব্বার জানান, প্রতি বছর ধানের চাষ করি। এ বছরও করছি। তবে বীজের দাম বেড়েছে। শ্রমিকের মজুরিও বেশি। ফলন ভালো হলে লাভের মুখ দেখা যাবে।
কৃষক মইনুল হক বলেন, সব কিছুর দাম বেশি থাকায় ধান চাষে ব্যয় বেশি হচ্ছে। এবার বীজ ভালো পাওয়া গেছে। আশা করি ফলনও ভালো আসবে।
এ বিষয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজতলার তেমন একটা ক্ষতি না হওয়ায় উপজেলার কৃষকরা অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছেন। আশা করছি, মূল লক্ষ্যমাত্রার বেশি বোরো ধান চাষ হবে। এছাড়াও উপজেলার কৃষকদের বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে জমিতে চারা রোপণ করা পর্যন্ত সব পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।