দেশের চাষাবাদ পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে আজ, এতে করে কৃষকের গৃহে লাঙ্গল জোয়ালের মতো ধান কাটা আর ধান মাড়াইয়ের ব্যবস্থাপনায়ও লেগেছে পরিবর্তন। আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজনে চিরচেনা লাঙ্গল জোয়াল অনেকটাই চোখের আড়ালে চলে গেছে। কালের আবর্তে শ্রমিকের সারিবদ্ধ হয়ে ধান কাটা আর কাটা ধান বহনের দৃশ্য এবং কৃষকের কঠোর পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তির কথাও একদিন হয়তো পাওয়া যাবে রূপ কথার গল্পে।
কৃষিতে আধুনিকায়ন আর যান্ত্রিকায়নের ফলে আজ ধান কাটা, মাড়াই, ধান ঝাড়াই-বস্তাবন্দি করতে শ্রমিকের জন্য এখন আর বেগ পোহাতে হয় না। শ্রমিকের অপ্রতুল্যতায়ও স্বল্প খরচে ফসলের মাঠেই ধান কাটা, ধান মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দি হয়ে যাচ্ছে আজ নিমিষেই।
কৃষিতে যান্ত্রিক সমৃদ্ধির চিত্র এক সময় উন্নত দেশে দেখা গেলেও প্রযুক্তির উৎকর্ষে তা আজ শহরের গন্ডি পেরিয়ে প্রত্যন্ত মফস্বলে দেখা মিলছে অনায়েশে।
কৃষিতে যান্ত্রিকায়নের ফলে আজ মফঃস্বলের লাখাইয়েও বীজতলা থেকে ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত ফসল উৎপাদনের সার্বিক ব্যবস্থানায় সুফল পাচ্ছেন কৃষক। কিন্তু যান্ত্রিকায়নের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান বাংলার চিরচেনা কৃষি আর কৃষকের রূপ। আজ আর কৃষকের জোয়ালে সকালের নাস্তা আলুভর্তা, ডাল, পেঁয়াজ কাঁচা মরিচসহ ভাজা ভাতের পোটলা চোখে পড়ে না।
তবে বাপ দাদার পুরানো সেই ঐতিহ্য ধরে রাখার নিরন্তর চেষ্টায় এখনো উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় প্রবীণ কৃষকদের বাড়িতে দেখা মেলে কাঠের লাঙ্গল আর বাঁশের জোয়াল। এছাড়া মফস্বলের হাটবাজের দেখা মেলে সনাতনী কৃষি যন্ত্রপাতির। তবে সেগুলোর চাহিদা কম থাকায় কারিগররা বাধ্য হয়েই বদলাচ্ছেন পেশা।
গরু আর লাঙ্গল জোয়াল দিয়ে হাল চাষ করেন এমন কৃষকদের সঙ্গে আলাপ কালে তারা জানান, 'ছোট্ট বেলায় বাপ চাচাদের সঙ্গে কত হাল বাইছি, সেই মায়াতেই এখনো মাঝে মধ্যে হাল বাইতে বের হই। বাপ দাদাদের কথা গরু দিয়ে হালে জমির শক্তি বাড়ে, আগের দিনগুলোর কথা মনে পড়লেই অনেক কষ্ট লাগে। ফিরে পাওয়া যাবে না সেই পুরানো দিনগুলো।'