শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
শরণখোলায় প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত

বাগেরহাটের শরণখোলায় পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকায় নতুন প্রধান শিক্ষক যোগদানের ঘটনায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। গত রোববার উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির একজন, চতুর্থ শ্রেণির একজন ও পঞ্চম শ্রেণির চারজনসহ মোট ছয়জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা না হলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার ১১০ নম্বর নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নাহার সরকারি বিধিমোতাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করে ৭ নম্বর রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসছেন- এমন সংবাদে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে দেন। আর এতে বিড়ম্বনায় পড়েন ক্লাস করতে আসা প্রধান শিক্ষক নাসরিন নাহার। পরে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিকাল ৪টার পর বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন তিনি। রোববার সকালে প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নাহার বিদ্যালয়ে আসেন। কিন্তু ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে আসা থেকে বিরত রাখেন। যার ফলে ২১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ছয়জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

এ ব্যাপারে অভিভাবক মিলন ফরাজী, আব্বাস আলী গাজী জানান, পূর্বের বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন সময় নাসরিন নাহার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকসহ স্থানীয়দের রোষানলের স্বীকার হন তিনি। পরে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ৭ নম্বর রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এ ঘটনা অভিভাবকরা জানলে তাকে প্রতিহত করার জন্য শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দেন। তাকে অন্যত্র বদলি না করলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না বলে অনেক অভিভাবক জানান।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নাহার বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। একটি পক্ষ তার সুন্নাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নান্না মিয়া জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, সরকারি নিয়মানুযায়ী তিনি যোগদান করেছেন। তার বিরুদ্ধে পূর্বের বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন কিছু অনিয়মের কথা শোনা যায়। তাই অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামীম জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। আগের প্রতিষ্ঠানে কিছু অনিয়মের জন্য অভিভাবকরা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে