উপজেলা নির্বাচন :নেত্রকোনায় প্রার্থীদের প্রচারণা
প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
চন্দন চক্রবর্তী, নেত্রকোনা
নেত্রকোনা সদর উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা গণসংযোগের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছেন।
জানা গেছে, আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থীর মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন- সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মানিক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল আলম হিরা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান খান অভ্র, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিএম খান পাঠান বিমল, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক তুহিন আক্তার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খানসহ অন্যরা।
চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মানিক ১৯৮১-৮২ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তিনি ১৯৮৪-৮৬ সালে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্র্মী ছিলেন। আতাউর রহমান খান মানিক ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত নেত্রকোনা সদর উপজেলা আ'লীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, ২০০৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সদর উপজেলা আ'লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০০৪ সাল থেকে অদ্যাবধি জেলা আ'লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৯ সালে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল আলম ফারাস হিরা ১৯৮৯ সাল থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সদস্য, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সফল সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সাবেক ছাত্রনেতা মজিবুল আলম ফারাস হিরা বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে একাধিকবার হামলা, মামলাসহ নির্যাতনের শিকার হন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান খান অভ্র সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম অধ্যাপক তফসির উদ্দিন খানের সন্তান। তিনি ১৯৯১ সালে নেত্রকোনা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের (নেকসু) নির্বাচিত ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সদস্য, ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সফল সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মারুফ হাসান খান অভ্র ২০০২ সালের ৩ এপ্রিল জোট সরকারের রোষানলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করে একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর অপারেশন ক্লিনহার্ট অভিযানে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিএম খান পাঠান বিমল তিন দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি প্রায় ২৭ বছর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের টানা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে অ্যাডভোকেট জিএম খান পাঠানের ব্যাপক পরিচিতি ও সুনাম রয়েছে। তিনি একজন দক্ষ আওয়ামী সংগঠক হিসেবে দলের দুঃসময়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বিগত তিনটি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সদর উপজেলায় অ্যাডভোকেট জিএম খান পাঠানের ক্লিন ইমেজ রয়েছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক তুহিন আক্তার বিগত ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে প্রায় ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ও ২০১৯ সালে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৫২'র ভাষা আন্দোলনের সৈনিক মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচিত এমপি, বাংলাদেশ শাসনতন্ত্র রচনা পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ সংবিধানের স্বাক্ষরকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল মজিদ তারা মিয়ার মেয়ে তুহিন আক্তার প্রায় ১৪ বছর সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার সার্বিক উন্নয়ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বর্তমানে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য পদেও সিভি জমা দিয়েছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের টানা ৩০ বছরের সভাপতি ও সদর আসনের তিনবারের নির্বাচিত এমপি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জননেতা মরহুম ফজলুর রহমান খানের সহোদর। হাফিজুর রহমান খান ১৯৭৮ সালে নেত্রকোনা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৭৯ সালে নেত্রকোনা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা শাখার সহ-সভাপতি, ১৯৯০ সালে জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ১৯৯৫ সালে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৮ সালে জেলা আ'লীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ২০১৭ সালে জেলা আ'লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।