গোদাগাড়ী উপজেলায় এবার মনোনয়ন প্রত্যাশীর ছড়াছড়ি
প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আব্দুল বাতেন, গোদাগাড়ী (রাজশাহী)
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডামাডোল শেষ হতে না হতেই দরজায় এসে কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন থেকে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের দিকেই ঘোষণা করা হতে পারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল।
এই নির্বাচন ঘিরেই রাজশাহীজুড়ে বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা। বর্তমান চেয়ারম্যানরা দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে করছেন সভা। আবার নতুন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করে জানান দিচ্ছেন তাদের নির্বাচন করার কথা। বর্তমান এবং নতুনরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তুলে ধরছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রম্নতি।
তবে নির্বাচন থেকে দূরে সরে আছেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে। যদিও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভোটে আসবে কিনা তাও এখনি মুখ খুলছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া অন্য কোনো দলের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার মনোভাব দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করবেন। আবার এই দলের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র বা বিরোধী হয়ে ভোটের মাঠে লড়াই করবেন বলে আভাস পাওয়া যায়।
এবার গোদাগাড়ী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যানসহ মোট ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ২০১৯ সালে নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান। গতবার মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়লে বিদ্রোহী হয়ে ভোট করে পরাজিত হন। এর পর স্থানীয় এমপির কাছ থেকে দূরে সরে যান। দলীয় কর্মকান্ড থেকেও তিনি সরে দাঁড়ান। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলে সেখান থেকে দূরে থাকেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে সরব থাকতে দেখা যায়।
এছাড়াও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক সুনন্দন দাস রতন। তিনি কাস্টমস গেয়েন্দা সংস্থার সহকারী পরিচালক ছিলেন।
এছাড়াও উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচন করার প্রত্যাশা করতেই পারেন। তবে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশনার বাইরে গিয়ে নির্বাচন করবেন না। তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই তারা নির্বাচন করবেন বলে জানান।
বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমি যেহেতু নৌকার প্রার্থী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আছি, তাই মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আমি জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইছি। এছাড়াও গত নির্বাচনে যেসব প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলাম সেসব শতভাগ বাস্তবায়ন না হলেও কম উন্নয়ন হয়নি। আগমীদিনে আবারও সুযোগ পেলে এই এলাকার উন্নয়ন শতভাগ বাস্তবায়ন করব।'
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল সালাম শাওয়াল বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। তাই আমাদের কোনো নেতাকর্মী নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।'
রাজশাহী জেলা পশ্চিম জামায়াতের আমির গোদাগাড়ী মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল খালেক জানান, নীতিগত ও দলীয়ভাবে জামায়াতের পক্ষ থেকে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত বহাল আছে। তাই এখনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি বলা যাচ্ছে না।
এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক বরজাহান আলী পিন্টু বলেন, 'আমাদের দলীয় সভা হবে। সেই সভায় কি সিদ্ধান্ত হয় তারপর বলা যাবে কে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন নাকি হবেন না।'