ধুনটে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনার পরও বহালতবিয়তে সেই শিক্ষক
প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনার পরও একই কর্মস্থলে বহালতবিয়তে রয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার বিশ্বহরিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমরুল কায়েস। ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রধান শিক্ষক ইমরুল কায়েসকে অনিয়মের অভিযোগে বদলির প্রস্তাবনা পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা কার্যকর করেনি প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
এদিকে দীর্ঘদিনেও অধিদপ্তরের আদেশ কার্যকর না হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিয়ে রাগ ঝেড়েছেন প্রধান শিক্ষক ইমরুল কায়েস। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর ফেল করে দেওয়া ছাত্রীর বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। গত ২২ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান ও নুরুল ইসলাম সরেজমিন তদন্ত করলেও এখনো কোনো প্রতিবেদন দাখিল বা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই অভিভাবক।
জানা গেছে, উপজেলার বিশ্বহরিগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় ৬৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। গত ২০ ডিসেম্বর ফলাফলে মাহিয়া খাতুন ৫টি বিষয়ে এবং তার ফুফাতো ভাই শাহাদত ৬টি বিষয়ে ফেল করে।
এ বিষয়ে মাহিয়া খাতুনের বাবা আব্দুস সালাম আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, 'প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বিশ্বহরিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বিদ্যালয়ের স্স্নিপের টাকা, ক্ষুদ্র মেরামত, গাছ বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যকলাপ করেছেন। এসব বিষয়ে আমি এবং অভিভাবক জাকারিয়া, ইমরান, শামিম, বিদু্যৎসহ অনেক অভিভাবক ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরের লিখিত অভিযোগ দেই। এ কারণে প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে ৬৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে শুধু আমার মেয়ে ও ভাগ্নেকেই ফেল করে দিয়েছেন।'
তবে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ইমরুল কায়েস তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'তদন্ত কমিটি ওই পরীক্ষার্থীদের খাতা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তবে বদলির বিষয়ে এখনো কোনো চিঠি পাইনি।'
এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই প্রধান শিক্ষককে বদলি করতে পার্শ্ববর্তী একটি বিদ্যালয়ের প্রস্তাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ফেল করার অভিযোগের তদন্ত কমিটি এখনো রিপোর্ট প্রদান করেনি।
বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।