পাবনা সদরের মালঞ্চি ইউনিয়নের বিলভিদুড়িয়া গ্রামের কৃষক আসলাম হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউব দেখে রঙিন ফুলকপির চাষ করে আলোচনায় এসেছেন। দুই বিঘা জমিতে দীর্ঘদিন ধরে তিনি পালং শাকের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি চাষ করে আসছিলেন। এবার দেড় বিঘা জমিতে চাষ করেছেন রঙিন ফুলকপি।
কৃষক আসলাম হোসেন জানান, ইউটিউবে দেখতে পান রঙিন ফুলকপির চাষের বিষয়ে। সেখান থেকে দেখার পর এই কপি চাষের আগ্রহ সৃষ্টি হয় তার। খোঁজ নিয়ে ঢাকা থেকে তিনি বেগুনি রংয়ের ভেলেনটিনা ও হলুদ রংয়ের কেরটিনা জাতের ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করেন।
আসলাম হোসেন বলেন, বীজ এনে চারা তৈরি করার পর দেড় বিঘা জমিতে তিনি ছয় হাজার চারা রোপণ করেন। ইতোমধ্যেই তিনি কেরটিনা জাতের হলুদ রংয়ের ফুলকপি সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরুর করেছেন। গত ২০ জানুয়ারি থেকে বাজারে খুচরা-পাইকারি বিক্রি করছেন এই ফুলকপি।
তিনি বলেন, রঙিন কপির প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ থাকায় ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে সাধারণ কপি ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর তার রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে। তবে ভেলেনটিনা জাতের বেগুনি রঙের কপি এখনো বাজারজাতকরণের জন্য প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন, 'শুরুতে কেউ বিষয়টি নিয়ে উৎসাহ দেয়নি। তবে ভালো ফলন আর ভালো দাম পাওয়ায় তিনি খুশি। এখন তার ক্ষেতের হলুদ আর বেগুনি রঙের বিদেশি জাতের কপি দেখতে মানুষ আসছেন। ভিড় জমাচ্ছেন।'
খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এক বিঘা জমিতে সাদা কপি চাষের খরচ ২০-২৫ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ৪০-৫০ হাজার টাকায়। রঙিন ফুলকপিতে এক বিঘায় ৩৫-৩৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বিক্রি ৮০-৯০ হাজার টাকা। এমনটি তিনি আশাবাদী। আর দেড় বিঘা জমির রঙিন ফুলকপি দেড় লাখ টাকার কাছাকাছি বিক্রি করতে পারবেন বলেও জানান। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই বিদেশি জাতের ফুলকপি আবাদের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন বলে তিনি জানান।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, 'আমাদের দেশে রঙিন ফুলকপি বাণিজ্যিকভাবে আবাদ শুরু না হলেও অনেক আগেই জাপান-ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে আবাদ হচ্ছে। শুনেছি ব্যক্তিপর্যায়ে সৌখিনতাবশত কেউ কেউ এটি আবাদ করছেন। তারা এই আবাদ করে লাভবানও হচ্ছেন বলে শোনা যায়। তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে সুবিধা এখনো না দিতে পারলেও আমরা তাদের সবসময় সহযোগিতা করব।