সারিয়াকান্দিতে ভরা মৌসুমেও নাগালের বাইরে সবজির দাম
প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
শীতকাল সবজির ভরা মৌসুম। অথচ এক কেজি বেগুন কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায়, শিম ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। এখন বাজারে আসলে মাথা গরম হয়ে যায়। আর পকেট হয় শীতল।
গত শুক্রবার বগুড়ার সারিয়াকান্দি কাঁচা বাজারে কেনাকাটা করতে এসে ক্ষোভ নিয়ে এসব কথা বলেন সবুজ মাস্টার নামে একজন শিক্ষক।
বেসরকারি বিদ্যালয়ে চাকরি করা ওই শিক্ষক বলেন, বগুড়া জেলাসহ সারিয়াকান্দি উপজেলা সবজির জন্য বিখ্যাত। এখানে উৎপাদনও হয় প্রচুর। তবু বাজারে এত চড়া দাম। গত বছরে যে দামে কেনা হয়েছিল এবার তার চেয়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। এর জবাব কারো কাছে নেই। দ্রব্যমূল্যের যে দাম বেড়েছে, আমাদের আয় কী বেড়েছে ছিটেফোঁটাও বাড়েনি।
সবজির বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখার দাবি জানান সবুজ মাস্টার।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি স্টিক আলু ৪০ টাকায়, দেশি পাকড়ি আলু ৪৫, পেঁয়াজ ৮০, মরিচ ৬০ থেকে ৭০, শিম ৫০ থেকে ৬০, বেগুন ৭০, মিষ্টি কুমড়া ও বরবটি ৬০, খিরা ৫০, মটরশুঁটি ১০০ এবং ফুলকপি, টমেটো ও গাজর ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস বাঁধাকপি ২০ টাকা ও লাউ ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সারিয়াকান্দি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. আলম বলেন, 'এক সপ্তাহ আগেও বেগুন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। কৃষকরা মাঠেই এখন এমন দাম নিচ্ছেন। যার কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্য সবজির দাম মোটামুটি একই রকম আছে। এছাড়াও সারিয়াকান্দিতে উৎপাদিত সবজি দ্বারা তো সারিয়াকান্দির চাহিদা পূরণ হয় না। বেশির ভাগ সবজি বিভিন্ন সবজির মোকাম থেকে আনতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো মহাস্থান হাট, সেখানেই দাম বেশি।'
বগুড়ার সবজির মোকাম মহাস্থান হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় সবজির উৎপাদন খরচ বেড়েছে। একই সঙ্গে সবজির ফলনও কমেছে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় বেশি দামে সবজি বিক্রি করছেন কৃষক ও পাইকাররা।
শুক্রবার মহাস্থান হাটে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি সাদা আলু ২৮ থেকে ৩২, লাল পাকড়ি ৩৪ থেকে ৪২, ফুলকা ১৬, ফুলকপি ২০ থেকে ৩৩, পেঁয়াজ ৫৭ দশমিক ৫, মরিচ ৪৫ থেকে ৫০, মুলা ১৭ থেকে ২২, কুমড়া ২৫, গাজর ২২, পেঁপে ৩০ টাকা দামে বিক্রি হয়। প্রতি পিস লাউ ৩৫ ও বাঁধাকপি ১৭ থেকে ২৩ টাকায় বিক্রি করেছে কৃষকরা।
হাটের পাইকাররা বলেন, গত বছর এ সময় ফুলকপি, মুলায় তাদের লোকসান হয়েছিল। এ কারণে এবার মূল শীতকালীন সবজির আবাদ কম করেছেন কৃষকরা। এ সময় যশোর, ঠাকুরগাঁও থেকেও ফুলকপি, বাঁধাকপি আসত। কিন্তু সেটাও আসছে না। আর আবাদেও এবার খরচ বেড়েছে। এসব কারণে সবজির দাম বেশি।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮শ' হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ হয়েছে ৬৮০ হেক্টর। এই পরিমাণ জমিতে শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয়েছে ৮ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিমের কাছে বাজার মনিটরিংয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাজার মনিটরিং করা আমাদের কাজ না। বাজার মনিটরিং করবেন কৃষি বিপণন কর্মকর্তারা।'