শৈত্যপ্রবাহে আলুক্ষেতে লেট বস্নাইট রোগ, দিশেহারা চাষি
প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুরে শীত, কুয়াশা ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলুক্ষেতে পচন রোগ বা লেট বস্নাইট (নাবি ধসা) রোগ দেখা দিয়েছে। এর ফলে বারবার ক্ষেতে বালাইনাশক স্প্রে করেও তেমন ফল না পাওয়ায় দিশেহার হয়ে পড়েছেন আলুচাষিরা। সেই সঙ্গে বালাইনাশক ওষুধের মূল্য তুলনামূলক বেশি হওয়ায় চরম সংকটে পড়েছেন চাষিরা।
বিশেষ করে উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙালিপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেওয়ায় কৃষকদের ওষুধ স্প্রে করতে দেখা গেছে।
কৃষকরা জানান, ক্ষেতে বারবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে স্প্রেকৃত ওষুধ ধুয়ে যাচ্ছে। ফলে পরদিন আবার স্প্রে করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ তিন থেকে চারবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করেছেন জমিতে।
এতে আলুক্ষেত নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় আছেন তারা।
উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের দোলাপাড়ার চাষি হোসেন আলী জানান, 'এ বছর দেড় বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। জমিতে শীত ও কুয়াশার কারণে লেট বস্নাইট রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের কর্মীরা আমাদের পাশে নেই। কীটনাশক দোকানের মালিকদের পরামর্শে আলুর জমিতে ওষুধ স্প্রে করছি। কিন্তু খুব একটা কাজ হচ্ছে না।'
খাতামধুপুরের চাষি দুলু ও লাল্টু বলেন, 'আমাদের এলাকায় ব্যাপক আকারে আলুক্ষেতে লেট বস্নাইট রোগ দেখা দিয়েছে। শীত ও কুয়াশার কারণে প্রতিদিনই জমিতে স্প্রে করতে হচ্ছে। ছত্রাকনাশক ওষুধের যে দাম, এতে কুলাতে পারছি না। সেই সঙ্গে এমন ঠান্ডায় শ্রমিকরা কাজ না করায় মহাবিপদে পড়েছি।'
উপজেলার বোতলাগাড়ির বসুনিয়া জানান, আক্রান্ত ক্ষেতে একাধিকবার বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ছড়িয়েও তেমন কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সব জাতের আলুক্ষেতেই এবার এই রোগ দেখা দিয়েছে। এভাবে আবহাওয়া চলতে থাকলে আলু চাষ করে লাভ তো দূরের কথা, বীজের টাকাও উঠবে না।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ সংবাদকর্মীদের জানান, এ বছর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে এক হাজার ২৯২ একর বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করা হয়েছে। অব্যাহত শীত ও কুয়াশায় কিছুটা ক্ষতি হলেও বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পাশে রয়েছেন।