শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

তীব্র শীতে দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ

স্বদেশ ডেস্ক
  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
তীব্র শীতে দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ

তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, তীব্র শীতে কাঁপছে পাহাড়ের মানুষ। ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জীবনযাত্রা। ঘন কুয়াশা, হিমেল বাতাস আর হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে শিশির। গত দুই দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে পুরো রাজস্থলী উপজেলা। অন্যদিকে দেখা যায় দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চালাতে হচ্ছে যানবাহন।

এদিকে রাত ও দিনে তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের চেয়ে রাতে অনেক বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। প্রচন্ড শীতে কাজে বের হতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এখানে গবাদি পশুরাও ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। এসব প্রাণী শীতজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথগুলো। গাছের পাতা, ফসলের ক্ষেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশির বিন্দু। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কাজের সন্ধানে ছুটছেন কর্মজীবী মানুষ। বিদ্যালয়মুখী শিক্ষার্থীরা আগুন পোহাচ্ছে লাকড়ি জ্বালিয়ে। তবে গ্রামের অন্য সময়ের চেয়ে লোকসমাগম কম। এমনকি হাটবাজারে পুরাতন কাপড়ের বাজারেও ক্রেতার উপস্থিতি নেই।

বাঙালহালিয়া আগাপাড়া এলাকার মংসিহলা মারমা বলেন, ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে না। আগে দিনে ৬০০ টাকা মজুরি আয় হতো। গত কয়েক দিন ধরে ঠান্ডার কারণে কাজে বের হতে পারেননি। তাই তেমন আয় হচ্ছে না। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে।

রাজস্থলী বাজারের টমটম চালক জমির উদ্দিন বলেন, 'সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় রাস্তা দেখা যাচ্ছে না। লাইট জ্বালে গাড়ি চালাচ্ছি। বিকাল ৪টার পর ঘন কুয়াশা শুরু হয়। সন্ধ্যা হইলে হেডলাইট জ্বালেও কিছুই দেখা যায় না।'

এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় সময় দেখা যায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।

চিকিৎসকরা জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় চলাফেরায় সবাইকে সাবধান হতে হবে।

স্থানীয়রা জানান, শীত নিবারণের জন্য সরকার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলে সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে।

নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় গত ১০ থেকে ১২ দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অফিস গত বুধবার ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন নিকলীর সবক'টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডার গার্টেন স্কুলের মোট সংখ্যা ৭০টি।

জানা যায়, নিকলীতে শৈত্যপ্রবাহের কারণে হাসপাতালগুলোতে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। শিশুরা এই শীতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। বৃদ্ধরা বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি-কাশিসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার বলেন, অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সরকারি আইন অনুযায়ী বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে