চালক না থাকায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা ১২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা না পেয়ে এই উপজেলার মানুষের ভরসা এখন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা। ফলে বাড়তি ভাড়াসহ চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।
উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক বসবাসকারী লোকের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল ৫০ শয্যাবিশিষ্ট দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সটি। পার্শ্ববর্তী কলমাকান্দা উপজেলার লোকজনও চিকিৎসা নেন এখানে। প্রতিদিনই হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে শতাধিক লোক চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। তবে এতবড় একটি উপজেলার জন্য মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স আছে। তাও এখন সেটা চালানোর লোক নেই। যার কারণে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিতে পারছে না মানুষ।
গত ৯ জানুয়ারি দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীকে (সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতক ও মা) নিয়ে যাওয়া নিয়ে স্বজনদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া চান চালক শাহাদাত হোসেন। সেই অতিরিক্ত ভাড়ার নিয়ে দাম কষাকষিতেই দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলে ওই নবজাতকের মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। এরপরে ১০ জানুয়ারি শাহাদাত হোসেনকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালানো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ঘটনার পর থেকেই এ পর্যন্ত ১২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত জিপ গাড়ির চালক অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারবে না। তবুও নিয়মের তোয়াক্কা না করে ওই চালক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ির পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স চালাতেন। তাই রোগীদের স্বজনদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতেন। তাছাড়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ি চালানোর সময় বন্ধ থাকতো সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা। এদিকে বর্তমানে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা না পেয়ে মানুষ যেমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, অন্যদিকে অ্যাম্বুলেন্সটি গ্যারেজ বন্দি হয়ে পড়ায় যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা জানান, অ্যাম্বুলেন্স চালক চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চালক পেলেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হবে।