সামাজিক বন বিভাগ যশোর কর্তৃক নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় গড়ে উঠেছে সামাজিক বনায়ন। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে পাঁচুড়িয়া ব্রিজ হতে মঙ্গলহাটা গ্রামের আকবরের বাড়ি পর্যন্ত ১০.০ সি.কি. বাগান পরিচালনা ব্যয় খাতের আওতায় ১০ হাজার চারা রোপণ করা হয়। এ বাগানে পুরুষ ও মহিলা উপকারভোগীর সমন্বয়ে চুক্তিনামা সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার দক্ষিণ এলাকায় নবগঙ্গা নদীর পাড়ে এ বাঁধ বাগানটি দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। বন বিভাগ কর্তৃক সবুজায়নের ফলে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ সুন্দর ও মনোরম হয়েছে। সবুজ, ছায়া নিবিড় এই বাগানে স্থানীয় কৃষক ও পথিক ক্লান্তির পরশ বুলিয়ে নেয়। বাগানটি অক্সিজেন সরবরাহের উৎস হিসেবে কাজ করছে। বিভিন্ন প্রজাতির পাক-পাখালির কলরবে বাগানটি মুখরিত থাকে। বাগানটি ভূমি ক্ষয়, বাঁধ সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধে সহায়তা করছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাগানটি প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নয়ন সাধন করছে।
এ বাগানে প্রায় ৩০ প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়েছে। যেমন- আকাশমনি, মেহগনি, গামার, বাবলা, ইপিল ইপিল, দেবদারু, খৈয়া বাবলা, কাঁঠাল, চালতা, জলপাই, চিকরাশি, পেয়ারা, আতা, আম, আমলকী, হরীতকী, বহেরা, কাঠ বাদাম, বাতাবিলেবু, কদবেল, জারুল, তেঁতুল, পুয়ো, নিম, জাম, লম্বু, শিলকড়ই ইত্যাদি প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে।
১০ বছর পর বাগানের আবর্তকাল উত্তীর্ণ হলে বাগানের গাছ বিক্রি করে সেই অর্থের ৫৫ শতাংশ লভ্যাংশ উপকারভোগী সদস্যদের সমভাবে প্রদান করা হবে। এছাড়া ভূমি মালিক, ইউনিয়ন পরিষদ, সামাজিক বনায়নের নীতিমালার আলোকে লভ্যাংশ পাবেন।
বাগানটির উপকারভোগীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রোপিত গাছের সংরক্ষণ ব্যবস্থায় নজর রেখেছেন। সামাজিক বন বিভাগ যশোরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সহকারী বন সংরক্ষক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা ফরেস্টার ও অন্যান্য কর্মচারীরা মাঝে মধ্যে বাগানটি পরিদর্শন করে বাগানে রোপিত গাছের সংরক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার করেছেন। বাগানের উপকারভোগী চরমলিস্নকপুর গ্রামের ঝন্টু শেখ, পাঁচুড়িয়া গ্রামের দুলদুল খান ও হ্যাপি বেগম জানান, বন বিভাগের নির্দেশনা মেনে গাছ সংরক্ষণ ব্যবস্থা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে নড়াইল জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসকে আব্দুর রশীদ বলেন, 'নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় বন বিভাগের এ ধরনের বনায়ন কর্মসূচি চলমান থাকবে।'