রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে গণস্বাক্ষর

ফরিদগঞ্জে মাছের ঘের খেয়ে ফেলছে সড়ক

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
  ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাছের ঘেরের কারণে খালের পাড় ভেঙে ধসে পড়ে চিকন হয়ে যাওয়া রাস্তা -যাযাদি

বছরের পর বছর সড়কের পাশের চরে মাছ চাষ করার কারণে ভাঙনের কবলে পড়েছে একটি সড়ক। হাজার হাজার লোকজনের চলাচলকারী রাস্তাটি ভেঙে পড়লেও মেরামত করে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এমতাবস্থায় সড়কটি রক্ষায় এবং মৎস্যচাষিদের মাধ্যমে সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর গণস্বাক্ষরযুক্ত আবেদন করেছেন স্থানীয় লোকজন। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোন্দিপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চররাঘব রায় এলাকার।

এক সময় এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও ভাঙনের কারণে এখন সাইকেল চালিয়ে পারাপার হওয়াও দুষ্কর। গণমানুষের সড়ক খেয়ে ফেলা চরটি আবারও মাছ চাষের জন্য নিলামের আয়োজন হচ্ছে বলে জানা যায়।

জানা গেছে, উপজেলার সোভান বাজার-ভাটিয়ালপুর-হরিণা সড়ক-জয়গঞ্জ ঘাট পর্যন্ত সড়কের গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের উত্তর চররাঘর রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ চররাঘব রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় পর্যন্ত সড়কের এক কিলোমিটার সড়কটি ডাকাতিয়া নদী তীরবর্তী। সড়কের পশ্চিম পাশে বিশাল জনবসতি রয়েছে, যাতে অন্তত পাঁচ হাজার লোকের বাস। সড়কের পূর্বপাশে সিংহের চরে দীর্ঘদিন ধরেই মাছ চাষ করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। মাছ চাষের কারণে এক সময় গাড়ি চলাচল করা সড়কটি ভেঙে গেছে। এখন সড়কটি দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া দুষ্কর। স্থানীয়রা বারবার মাছচাষিদের সড়কটি মেরামতের জন্য বললেও তারা কর্ণপাত করছে না।

এমতাবস্থায় ২৫ জানুয়ারি সিংহের চরটি আবারও মাছচাষের জন্য নিলাম হবে। তাই সড়কটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী গণস্বাক্ষরযুক্ত একটি আবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর দিয়েছে।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রাণেশ্বর দাস, নুরু মিয়া, মিজানসহ বেশ কয়েকজন জানান, চরের অধিকাংশই জমির মালিক গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চরমথুরা গ্রামের বাসিন্দা। জমির মালিকদের অধিক লাভের জন্য প্রতিবছর মাছচাষের জন্য লিজ দেয় চরটি। কিন্তু গণমানুষের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চর ইজারাদারদের দায়িত্বহীনতার কারণে মাছে খেয়ে ফেলছে। মাছচাষের কারণে ব্যাপক ভাঙনের শিকার সড়কটি মেরামতে কোনো পক্ষই উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় লোকজনের ও ছাত্রছাত্রীদের চলাচলের খুবই কষ্ট হয়। রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে কোনো যানবাহন এই গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। এমনকি রিকশা, ভ্যানগাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না।

ইতোপূর্বে চাঁদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান আড়াই কিলোমিটার সড়কটির মধ্যে এক কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের জন্য ডিও লেটার দেওয়ার পর এলজিইডি সড়কটি পাকাকরণে প্রাক্কলন তৈরি করে। চলতি বছর সড়কটির পাকা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে এলজিইডি। কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখে এর ব্যয়ভার বেড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় কাজ হবে কিনা, এই চিন্তায় সবাই। কয়েকদিনের মধ্যেই আবারও চরের ডাক হবে। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছে, এবারের বর্ষায় সড়কটি পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহমেদ জানান, 'চলতি অর্থবছরে আমরা সড়কের পাকাকরণের কাজ শুরু করব। মাছচাষের কারণে সড়ক ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে লোক পাঠিয়েছি।'

ইউএনও মৌলি মন্ডল বলেন, 'সড়ক ভাঙার অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে