বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নে লাইসেন্সবিহীন সুন্দরবন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলায় ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এদিকে এক পক্ষ ওই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবি ও ভুক্তভোগী পক্ষ আসামিদের ফাঁসির দাবিতে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেছে।
গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও স্থানীয়দের আয়োজনে ডৌয়াতলা বাজারে সুন্দরবন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে ওই ইউনিয়নের তিন সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেয়।
এদিকে বামনা উপজেলা পরিষদের সামনে নিহত ওই প্রসূতির পরিবারের পক্ষে ওইদিন দুপুরে আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পাল্টা মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবার সাংবাদিকদের জানান, তারা মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের চেয়ারম্যানের স্বজন ও কর্মীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। নিহত মেঘলা আক্তারের মা পারভিন আক্তার বলেন, 'আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই। এর সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের মালিকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।'
এদিকে সকালে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে করা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বামনা উপজেলা চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু, সদর ইউপি চেয়ারম্যান চৌধূরী কামরুজ্জামান সগির, রামনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ ও ডৌয়াতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আ. জলিল।
চেয়ারম্যানের পক্ষে করা মানববন্ধনে বক্তারা হুঁশিয়ারি করে বলেন, দুই-একদিনের মধ্যে মিজানকে মুক্তি দেওয়া না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
জানা গেছে, গত ১৫ জানুযারি রাতে ডৌয়াতলা সুন্দরবন হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও তার গর্ভের সন্তানের মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলায় ৮ জন আসামির মধ্যে তিন নম্বর আসামি ওই ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে পালাতক অবস্থায় রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করের্ যাব। পরে তাকে বরগুনা কোর্টে নেওয়া হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান।