পটুয়াখালীর রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা
সহকারী সুপারসহ চার পদে গোপনে নিয়োগের অভিযোগ
প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নে রহমগঞ্জ হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় কোনো ধরনের নিয়ম অনুসরণ না করে কাগজে-কলমে সহকারী সুপারসহ চারটি পদে নিয়োগ সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা কমিটির বিরুদ্ধে। গত ডিসেম্বর মাসে এই নিয়োগ সম্পন্ন করলেও মাদ্রসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থনীয়রা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে গত রোববার নিয়োগ পাওয়া ওই চার পদের ব্যক্তিরা মাদ্রসায় উপস্থিত হলে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
ওইদিন সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রসার একটি কক্ষে বেশ কয়েকজন স্থানীয়সহ মাদ্রসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা এমএ মন্নান এবং ভারপ্রাপ্ত সুপার নজরুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে চার ব্যক্তিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে সকহকারী সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভপতি মাওলানা এমএ মন্নানের ছেলে সাইদুর রহমানকে, পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. ইয়ামিন, দপ্তরি পদে আতিকুর রহমান এবং আয়া পদে নিয়োগ পেয়েছেন সিমা নামে এক নারী। তবে ২১ জানুয়ারি তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেও তারা গত ১ জানুয়ারি থেকে মাদ্রাসায় যোগদান করেছেন বলে দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত সুপার।
তবে এই সভায় মাদ্রসার সহকারী মৌলভী হারুন অর রশীদ বলেন, 'এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা কোনো শিক্ষক কিছুই জানি না। পুরোপুরি গোপনে এই নিয়োগ হয়েছে। গত ২০ দিনেও তাদের কাউকে মাদ্রাসায় দেখা যায়নি। কিন্তু আজ সকালে এসে দেখলাম ১ জানুয়ারি থেকে তারা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। এটি পুরোপুরি অবৈধ একটি নিয়োগ।'
এদিকে ভারপ্রাপ্ত সুপার নজরুল ইসলাম দাবি করেন, গত ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর হাজিখালী দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বোর্ডের প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উপস্থিত ছিলেন।
এ নিয়ে কথা হয় নিয়োগ পাওয়া সহকারী সুপার সাইদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিকভাবে নিয়ম মেনে করা হয়েছে বলে দাবি করলেও এ সংশ্লিষ্ট কোনো কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি। এছাড়া গত ১ জানয়ারি থেকে সহকারী সুপার হিসেবে সাইদুর রহমান নতুন নিয়োগ পেলেও এখনো ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সহকারী মৌলভী নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে মাদ্রাসার দপ্তরি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ পাওয়ায় তিনজনের কেউই নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। নিয়োগ বোর্ডে কে কে ছিলেন, কোথায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং কবে তারা নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন- এসব প্রশ্নের জবাব কেউ দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেজাউল করিম বলেন, গত ১১ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নিয়োগের কোনো কাগজপত্র কেন দেখাতে পারেননি। কিভাবে পুরো বিষয়টি সম্পন্ন হয়েছে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান তিনি।