গৌরীপুরে ৫ শিক্ষার্থীর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত!
প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুক ৫ হাজার ৫১ জন ছাত্রছাত্রীর ভর্তি অনিশ্চিত! উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ছুটছেন এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অপেক্ষাকালীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান! ক্লাস শুরুর ২১ দিন পার হলেও এসব শিক্ষার্থী নিয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার দীর্ঘতালিকা থাকলেও গ্রামাঞ্চলে রয়েছে আসন ফাঁকা। মাদ্রাসাগুলোতেও শিক্ষার্থী সংকটে পূরণ হচ্ছে না শাখাগুলো!
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম জানান, 'শিক্ষার্থীদের এ সমস্যার বিষয়ে আমরা অবহিত আছি। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবেদন একত্রিকরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, স্কুল-মাদরাসার ৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৫টি শাখায় ৫৫ জন করে ৪ হাজার ১২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রতি বছর ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। সে অনুযায়ী প্রত্যেক বছর বইয়ের চাহিদা দেওয়া হতো। যেহেতু প্রতি শাখায় ৫৫ জনের বেশি ভর্তির সুযোগ নেই।
এদিকে গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামূল হক সরকার জানান, এ বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করে ৩৪৯ জন ছাত্রী। লটারির মাধ্যমে ৩টি শাখায় ১৬৫ জনকে ভর্তি করেছেন। আসনের অনুমতি পেলে ভর্তির জন্য অপেক্ষায় রেখেছেন আরও ১৬৫ জনকে।
ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরোত্তম রায় জানান, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করেছিল ১৯৬ জন। তাদের মধ্যে ১৬৫ জনকে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা হয়েছে। এ বছরের অপেক্ষাকালীন তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছি।
নুরুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক জানান, এ বছর ভর্তির জন্য আবেদন করেছিল ৪৫৫ জন। ৩টি শাখায় ৫৫ জন করে ভর্তি হয়েছে। ভর্তির জন্য অপেক্ষামাণ তালিকায় আরও ১৬৫ জনকে রাখা হয়েছে। ক্লাস শুরু হলেও তাদের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি।
অন্যদিকে মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে ইসলামাবাদ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ রুকুন উদ্দিন জানান, ৫৫ জন ভর্তি হয়েছে, ভর্তিচ্ছুক তালিকা রয়েছে ৩৫ জন। শাখা খোলার জন্য তিনি আবেদন করেছেন। পাছার সামাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আমিনুল ইসলাম জানান, ৫৫ জনের আসনের মধ্যে ২০ জন ভর্তি হয়েছে। ৩৫ জনের আসন এখনো শূন্য। হাসনপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ৫৫ জনের মধ্যে ৪০ জন ভর্তি হয়েছে। ১০ জনের আসন শূন্য আছে। নামাপাড়া কেরামতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার ছৈয়দ শহিদউলস্নাহ জানান, ৫৫ জনের মধ্যে ৩৫ জন ভর্তি হয়েছে। ২০ জনের আসন শূন্য।
এদিকে সরজমিনে দেখা যায়, উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে লটারির মাধ্যমে গ্রামের শিক্ষার্থীরাও শহরের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। গৌরীপুর পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সূরযবালা, জাগরণী, শেখ লেবু স্মৃতিসহ সুনামধন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মেধাবী তালিকার ১ থেকে ২০ জনের ক্রমিকে থাকা অর্ধেক শিক্ষার্থী কোথাও ভর্তি হতে পারেনি।
ইসলামাবাদ এলাকার মো. মাসুদ মিয়া জানান, তার পুত্রসন্তান পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শহরের সবগুলো স্কুলে আবেদন করেও ভাগ্যের লটারিতে সুযোগ পাওয়া যায়নি। কালিপুর দৈনিক বাজার এলাকার আরেফিন রহমান জানান, আমার সন্তান ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে লাভ কি! মেধা যাচাই লটারি মেনে নেওয়া যায় না।