শিক্ষাঙ্গনে ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে- শিক্ষাঙ্গনে ভর্তি বাণিজ্য এবং অন্য কোনো অনিয়মের সঙ্গে কেউ যুক্ত হলে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
রোববার চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নওফেল বলেন, নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। নতুন কারিকুলামের প্রধান লক্ষ্য হলো আমাদের সন্তানদের দক্ষ, জ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্ক মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা।
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজেদের পেশার প্রতি দায়িত্বশীল ও কর্তব্যপরায়ণ হতে হবে। শিক্ষকরা অবশ্যই রাজনীতি করবেন। কিন্তু অন্ধভাবে রাজনৈতিক দলের তোষামোদকারী হয়ে নিজের হীন স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা না করাটা বাঞ্ছনীয়। এতেই শিক্ষাঙ্গনে নৈতিকতা ও সৃজনশীলতার বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে এবং শিক্ষাঙ্গনে শত ফুল বিকশিত হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত প্রায় দুই কোটি শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করলেও মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এক কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করতে পারে। এই দুই কোটির মধ্যে মাত্র ২০ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত পাঠ গ্রহণ করতে পারে। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় প্রচলিত শিক্ষা ও পাঠ গ্রহণ কার্যক্রমে বিশাল অঙ্কের শিক্ষার্থী নিম্ন মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পাঠ গ্রহণ করতে পারায় তারা দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত হতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাঙালিদের অধিকাংশই অদক্ষ। তাই এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের গতি খুবই মন্থর। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে যে ২৯ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এগুলোর অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা কাঠামো সংস্কার অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেবে। শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব না হলেও এখন থেকেই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারলে আমরা অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবো।
নওফেল বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক দোকান নয়। শিক্ষার্থীরা যাতে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে এবং নিজেরা নিজেদের কর্মসংস্থান ঠিক করতে পারে সেই দিকে শিক্ষক ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টদের মনোযোগী হতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম নাছির উদ্দীন ও উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান।