স্বামীর হাতে স্ত্রীসহ ৩ জেলায় তিনজন খুন
দুই জেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে দুই মৃতু্য
প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে প্রতিপক্ষের হাতুড়ি পেটায় কৃষক নিহত ও মৌলভীবাজরের কুলাউড়ায় সিএনজিচালিত অটো চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ট্রেনে কাটা পড়ে ফেনীতে রাজমিস্ত্রি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় রেল কর্মচারীর মৃতু্য হয়। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল জানিয়েছেন, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদরের সুন্দর পশ্চিম পাড়া এলাকায় স্বামীর হাতে দুই সন্তানের জননী আসমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূ খুনের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী ফজলু তালুকদারকে (৪০) পুলিশ আটক করেছে। তিনি ওই গ্রামের নুরুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে। নিহত আসমা বেগম উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের পঞ্চাশ গ্রামের আরশেদ আলীর মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রাজমিস্ত্রি ফজলু ও নিহত আসমার দুই সন্তান নিয়ে সংসার। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক নানা বিষয়ে তাদের অশান্তি চলছিল। শনিবার রাতে মেয়ের ওড়না দিয়ে স্বামী ফজলু স্ত্রী আসমার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে ডেকে এনে তিনি এ ঘটনা জানান। ঘটনার বিস্তারিত জেনে স্থানীয়রা ফজলুকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
গোপালপুর থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মামুন ভূঁইয়া জানান, হত্যার অভিযোগে স্বামীকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে জমিতে কৃষান দেওয়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হাতুড়ি ও লাঠি পেটায় মোহসিন শেখ (৪৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। গত শনিবার রাতে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার মোচনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহসিন ওই গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে।
মুকসুদপুর থানার ওসি আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার বিকালে মোচনা গ্রামে জমিতে কৃষান দেওয়া নিয়ে মোহসিন ও তার ভাইদের সঙ্গে প্রতিবেশী দেলোয়ার চোকদার ও তার লোকজনের কথাকাটাকাটি ও হতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরদিন শুক্রবার মোচনা হাটে যাওয়ার সময় দেলোয়ারসহ ১০-১১ জন মোহসিনসহ তার সঙ্গে থাকা চারজনকে হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ওসি আরও জানান, এ ব্যাপারে পরিবার থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে রেললাইনের পাশ থেকে লিল মিয়া (৩৫) নামক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। রোববার দুপুরে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত লিল মিয়া ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আকদ্দছ মিয়ার ছেলে।
ভাটেরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম জানান, সিলেট আখাউড়া রেল সেকশনের ভাটেরা ও মাইজগাঁও স্টেশনের মধ্যবর্তী মনিপুর চা-বাগানের রাস্তা সংলগ্ন রেললাইনের পাশে রোববার ভোরে লিল মিয়ার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে পরিবার। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে চা-বাগানের নির্জন স্থানে লাশ ফেলে যায় বলে স্থানীয় লোকজনের ধারণা।
এদিকে লিল মিয়া হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিকাল ৪টায় ভাটেরা বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সিএনজি অটোচালকরা। আয়োজিত মানববন্ধনে ভাটেরা বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকার সহস্রাধিক লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
সিলেট রেলওয়ে থানার ওসি সাফিউল জানান, এটা ট্রেনে কাটা নয়। লাশের গলাকাটা ছিল। ময়না তদন্তের জন্য লাশ সিলেট ওসমানী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী প্রতিনিধি জানান, রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কানে হেডফোন লাগিয়ে অন্য একজনের সঙ্গে কথায় মনোযোগী ছিলেন শহিদুল ইসলাম জনি (২৫)। এ সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী একটি মালবাহী ট্রেন ফেনী রেল স্টেশন অতিক্রম করছিল। ট্রেনের শব্দ, হুইসেল কিছুই কানে ঢোকেনি। শেষে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন তিনি। জনি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের নদোনা গ্রামের মৃত দাউদুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথের ফেনী রেল স্টেশনের চট্টগ্রামমুখী আউটার সিগনালের অদূরে সহদেবপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শনিবার রাতে ট্রেনে কাটা পড়ে রবিউল ইসলাম রবি (৪২) নামে রেলওয়ের এক কর্মচারী নিহত হয়েছেন। আখাউড়া রেলওয়ে থানার সন্নিকটে ঢাকা-আখাউড়া ডাউন রেললাইনে রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রবিউল রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর (কার্য.) নিরাপত্তা চৌকিদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার রাজাপুর গ্রামের হাবিবুর মোলস্নার ছেলে।
খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে পরিচয় পাওয়া যায় নিহত ব্যক্তি ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী কার্যালয়ের নিরাপত্তা চৌকিদার ছিলেন। তবে কোন ট্রেনে কাটা পড়েছে ব্যাপারে নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি জসিম উদ্দিম খন্দকার বলেন, মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।