চৌগাছায় বাদাম উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় হতাশ চাষি
প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের চৌগাছায় চলতি মৌসুমে বাদাম উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তাদের অভিযোগ, বাদামের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসলের ফলনে এমন বির্পযয় সৃষ্টি হলেও চৌগাছা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো রকম খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, চৌগাছা উপজেলায় প্রায় দুইশ' হেক্টর জমিতে চীনা বাদামের চাষ হয়ে থাকে। তবে উপজেলার বাদাম উৎপাদনের সিংহভাগ উৎপাদিত হয় নারায়ণপুর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের ইলেশমারি, ভগবানপুর, হোগলডাঙা, বড়খানপুর, বাদেখানপুর, নারায়ণপুর, পেটভরা, গুয়াতলী, বুন্দলীতলা, বাটিকামারী, হাজরাখানা ও টেঙ্গুরপুর গ্রামে ব্যাপকভাবে বাদামের চাষ হয়ে থাকে।
ভগবানপুর গ্রামের কৃষক আবুজার রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি তিন বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। যেখানে কমপক্ষে ২৫ মণ বাদাম উৎপাদন হওয়ার কথা সেখানে, হয়েছে মাত্র ১২ মণ। একই গ্রামের তোহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন তার বাদাম উৎপাদন হয়েছে মাত্র দুই মণ।
বাদাম চাষিদের মধ্যে ভগবানপুর গ্রামের ওহিদুল ইসলাম দেড় বিঘা, রফিকুল ইসলাম দুই বিঘা, লিয়াকত আলী পাঁচ বিঘা, আব্বাস আলী আড়াই বিঘা, আজিজুর রহমান সাড়ে চার বিঘা, আলী হোসেন সাড়ে তিন বিঘা, আবুল বাশার আড়াই বিঘা, অমেদুল আড়াই বিঘা ও মতিয়ার রহমান তিন বিঘাসহ এ গ্রামের প্রায় সব কৃষক বাদাম চাষ করেছিলেন। তারা সবাই বলেন অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বাদামের উৎপাদন অর্ধেকেরও কম হয়েছে।
বাদাম চাষি লিয়াকত আলী বলেন, বাদাম একটি অত্যন্ত লাভজনক চাষ। প্রথমত বাদাম চাষের জন্য তেমন কোনো উর্বর জমির প্রয়োজন হয় না। দ্বিতীয়ত বাদাম চাষে জমির ওপর কোনো সারের প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র মাটির নিচে সার প্রয়োগ করলেই চলে। তৃতীয়ত বাদাম মাত্র তিন মাসের মধ্যে উৎপাদিত হয়। এসব কারণে বাদাম চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। যার ফলে এলাকার কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে বাদাম চাষ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর বাদামের উৎপাদনে একেবারে ধস নেমেছে।
এ বছর বাদাম উৎপাদন এত কম কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষক আলী হোসেন ও আবুল বাশার বলেন, 'আমরা ধারণা করছি এ বছর বাদামের যখন ফুল এসেছিল তখন বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সে কারণে হয়তো ফলন কম হতে পারে। এ ছাড়া ভিন্ন কোনো কারণেও ফলন কম হতে পারে, আমরা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।'
ফলন কম হওয়ার কারণ জানতে কোনো কৃষি কর্মকর্তা বাদামের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন কিনা জানতে চাইলে বাদাম চাষিরা বলেন, এ বছর না, বিগত এক যুগেও কোনো কৃষি কর্মকর্তা তাদের বাদামের ক্ষেত পরিদর্শন করেননি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বি হুসাইনের কাছে ফলন কম হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে কোনো কোনো গ্রামে বাদামের উৎপাদন কম হতে পারে। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়ে চাষিদের পরামর্শ দেব।