ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ভবনের নির্মাণ শেষ হবে কবে!

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ফেনী ও ফুলগাজী প্রতিনিধি
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ৩১ শয্যার বিপরীতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে। ছয়বার মেয়াদ বাড়ানোর পরও এখনো শেষ হয়নি হাসপাতাল ভবনটির নির্মাণ কাজ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এম এস ডালি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ নির্মাণ কাজটি পায়। গত ছয় বছরে এর বাহ্যিক ভৌত অবকাঠামোর অগ্রগতি হয়েছে ৮০ শতাংশ। কিন্তু অন্দরে কোনো কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। ফুলগাজীর প্রবীণ সাংবাদিক জাহাঙ্গীর জানান, ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের ছয়তলা বিশিষ্ট ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। এ নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি। কাগজ-কলম অনুযায়ী মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসের ২৫ তারিখে শুরু হয়ে ১৮ মাস পর্যন্ত। অথচ বাস্তবে ছয় বছরে এখন পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৮০ শতাংশ। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় আশানুরূপ চিকিৎসা সেবা নিতে ও দিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। চলতি বছরের মার্চ মাসে চতুর্থ মেয়াদের সময় শেষ হয়। পরবর্তীতে পুনরায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। তাতেও হাসপাতাল ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় তদারকি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নোটিশ দেয়। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে পরপর সময় বৃদ্ধির জন্য এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুচলেকা দিতে থাকে বলে জানান এ গণমাধ্যম কর্মী। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, 'সঠিক সময় আমরা কাজ শুরু করেছি। কিন্তু করোনার কারণে কাজ কিছু দিন বন্ধ ছিল। এছাড়া পুরনো ভবন রক্ষার্থে হাইড্রলিকরিক মেশিন দিয়ে পাইলিং করতে হয়েছে। কিন্তু দেশে হাইড্রলিকরিক মেশিনের অপ্রতুলতায় তার সঠিক সময় পাইলিং করা যায়নি।' তিনি আরও জানান, 'ভবনটি নির্মাণ কাজের অর্থ লেনদেন ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাসাইন করা। কিন্তু সঠিক সময় ব্যাংক আমাদের টাকা দিতে পারেনি। এছাড়া বর্তমানে বৈদেশিক এলসি বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় বর্ধনের জন্য আমরা আবার সময় চেয়েছি। আশা করি, এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারব। তদারকি সংস্থা ফেনী স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ জানান, ভবনটি নির্মাণে ডালি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে জমাকৃত টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের লোন সংক্রান্তে কেটে নেওয়ার ফলে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সমস্যায় পড়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে কাজের অগ্রগতি না থাকায় আমরাও টাকা ছাড় দিতে পারিনি। কাজ শেষ করার জন্য একাধিকবার নোটিশ দিয়েছি। তবে আমরা খবর নিয়ে দেখেছি ব্যাংকের সঙ্গে ইতোমধ্যে তাদের সমাধান হয়ে গেছে। সর্বোপরি তাদের কাজের অগ্রগতি ৮৯ শতাংশ। ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রুবাইয়াত বিন করিম জানান, ভবনের অপ্রতুলতায় এই হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে এই হাসপাতাল ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে শুনছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে একাধিকবার মেয়াদ বাড়লেও কাজ হচ্ছে না। এতে করে গোটা উপজেলার সাধারণ মানুষ সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে না।