২০ হেক্টর জমিতে আবাদ

'বল সুন্দরী' কুলে স্বপ্ন দেখছে চাষি

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সীতাকুন্ডের বারৈয়াঢালায় বল সুন্দরী কুল বাগান পরিদর্শনে উপ-সহকারির কৃষি কর্মকর্তা পিপাস কান্তি চৌধুরী -যাযাদি
জাতের নাম 'বল সুন্দরী' কুল। আবাদ হচ্ছে সীতাকুন্ডের পাহাড়ি এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। পাইকাররা কৃষকদের ক্ষেত থেকে টাটকা 'বল সুন্দরী' কুল পাইকারিতে কিনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক, অন্যদিকে 'বল সুন্দরী' কুলের সুনামও দেশের অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। 'বল সুন্দরী' কুল দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু। এ কুলের চাহিদা বেশি হওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল, বাড়বকুন্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, ভাটিয়ারী ও পৌরসভার শেখনগর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে আবাদ হচ্ছে। এ কুল ওপরের অংশ হালকা সিঁদুরের মতো লাল রঙের। তবে আপেল থেকে আকারে কিছুটা ছোট হলেও আপেল স্বাদে ও গুণে কোনো অংশে কম নয়। বল সুন্দরী কুল আবাদে বেশ লাভবান হয়েছেন বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল বস্নকের সৌখিন কৃষক স্থানীয় ইউপি সদস্য রাসেল। তিনি বলেন, '২০২২ সালের প্রথম দিকে ৫০ শতক জমিতে ৩০০টি উন্নত জাতের বল সুন্দরী কুলের আবাদ করেছি। গত বছরের তোলনায় চলতি মৌসুমে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। বল সুন্দরী আবাদে উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। বর্তমানে পাইকারিতে ১০০ টাকা কেজি হিসেবে বল সুন্দরী কুল বিক্রি করা হচ্ছে।' তিনি আরও জানান, 'শ্রমিক ও বিভিন্ন বাবদ খরচ বাদ দিয়ে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আমি আশাবাদী। কুল আবাদে আমি আর্থিকভাবেও অনেক লাভবান হয়েছি।' উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পিপাস কান্তি চৌধুরী বলেন, 'উন্নত জাতের বল সুন্দরী কুল খেতে খুব সুস্বাদু। গত বছর এখানকার স্থানীয় ইউপি সদস্য রাসেল ভাইকে ৫০ শতক জমির জন্য কৃষি অফিস থেকে ৩০০টি বল সুন্দরী কুলের গাছ দেওয়া হয়েছিল। চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে অন্তত ২০ কেজি করে কুল ধরেছে। গাছের ডালে ডালে ঝুলছে বল সুন্দরী উন্নত জাতের কুল। কুলের এমন উৎপাদন দেখে আরও অন্য কৃষক পরিবারগুলোও আগ্রহ প্রকাশ করছে বল সুন্দরী আবাদে।' এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাবিবুলস্নাহ বলেন, 'বল সুন্দরী কুল, আপেল কুল, বাউ কুল, টক মিষ্টি বরই, দেশি কুলসহ সব মিলিয়ে ১২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতি কুলের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার টেরিয়াইল, বাড়বকুন্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, ভাটিয়ারী ও পৌরসভায় অন্তত ৩০ জন কৃষক ২০ হেক্টর জমিতে বল সুন্দরী কুলের আবাদ করেছেন। বল সুন্দরী কুল খেতে স্বাদে মিষ্টিতে ভরপুর। এ কুল গাছ রোপণের এক বছরের মধ্যেই ফলন দেয়।' তিনি আরও জানান, কুল গাছ খরা সহ্য করতে পারে, রোগবালাই সহনশীল এবং অল্প যত্নেই অধিক ফলন উৎপাদন হয়। তাই দিন দিন বল সুন্দরী কুলের বাগান ও কৃষকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সীতাকুন্ডের পাহাড়ে কুল বাগানের কুলের মিষ্টতা ও স্বাদ তুলনামূলকভাবে উত্তর বঙ্গের অন্য স্থান থেকে একটু বেশি। তাই স্থানীয় ভোক্তাদের কাছে সীতাকুন্ডের বল সুন্দরী কুল অতি জনপ্রিয়। বেকার যুবকরা তাদের নিজনিজ খালি জায়গায় এ কুলের আবাদ করতে পারলে তারাও আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন। অন্যদিকে বেকারত্ব দূর হবে, আসবে সবার সচ্ছলতাও।