সারা দেশের ন্যায় বগুড়ার শিবগঞ্জে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে আলুর ক্ষেতে লেইট বস্নাইট রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। স্থানীয় বাজারগুলোতে নকল ছত্রাকনাশক ওষুধ বাজারজাত করায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী কৃষকরা। ১০-১২ বার জমিতে বিভিন্ন কোম্পানির ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করেও আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় আলুচাষিরা পড়েছেন বিপাকে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সময়মতো মানসম্মত বীজ না পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। গত ১০ দিন যাবত শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় ঘন কুয়াশার কারণে জমির আলুর ক্ষেতে লেইট বস্নাইট রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণেও ফসলের উৎপাদন কিছুটা কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরেজমিন উপজেলার আটমূল, কিচক, বুড়িগঞ্জ, পিরব ও পৌর এলাকার তেঘরী, সুলতানপুর, নয়াপাড়া, পনেরটিকাসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ কৃষকরা তাদের জমিতে আলু রক্ষার জন্য ওষুধ স্প্রে করছেন। পৌর এলাকার সুলতানপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম, মীরের চক গ্রামের আনিছুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আলুর তেমন মোড়ক দেখা দেয়নি। ফলে বিভিন্ন কোম্পানি আশানুরুপ ব্যবসা না করতে পেরে মজুতকৃত মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পুনরায় বাজারজাত করে কৃষকের কাছে বিক্রি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করেই তাদের এলাকায় আলু ক্ষেতে লেইট বস্নাইট রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। নকল ওষুধের কারণে জমিতে একাধিক ওষুধ স্প্রে করলেও কোনো কাজে আসছে না। অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য সাধারণ কৃষকরা প্রতারিত হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার বলেন, ইতোমধ্যে এই উপজেলায় কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকদের আলু রক্ষার্থে বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক ও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ গুণগত মান পরীক্ষার জন্য ঢাকা কৃষি বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে ওষুধের নমুনা পাঠানো হয়েছে। কৃষকদের কৃষি বিষয়ে পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসে হেল্প ডেক্স চালু করা হয়েছে। কৃষকদের সার্বক্ষণিক মাঠপর্যায়ে সুপরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আক্রান্ত কৃষকদের স্ব স্ব এলাকার বস্নক সুপারভাইজার উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের সঙ্গে পরামর্শ গ্রহণের জন্য যোগাযোগ করতে জানানো হয়েছে।