নওগাঁ জেলাজুড়ে বোরো রোপণে ব্যস্ত কৃষক

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

বরেন্দ্র অঞ্চল (নওগাঁ) প্রতিনিধি
কোথাও নলকূপ দিয়ে চলছে সেচ, কোথাও ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে জমি চাষের কাজ। আবার কোথাও কোথাও ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে চারা। মাঠের পর মাঠ জমি তৈরি, চারা তোলা আর রোপণে মহাব্যস্ত কৃষক। সব মিলিয়ে উদ্দেশ্য একটাই চাষাবাদ করতে হবে বোরো ধান। দেশের অন্যতম ধান উৎপাদনকারী বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলা নওগাঁয় প্রচন্ড শীতে কাবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে বোরোর আবাদসহ মানুষের অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবুও থেমে নেই ধান চাষিরা। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগ থেকে দেওয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ। জেলার দেউলা গ্রামের কৃষক রঞ্জিত সাহা বলেন, 'খুব ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো জমিতে কাজ করতে পারছি না। মাঝে মাঝে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণ করছি। ইরি-বোরো আবাদের জন্য ধান লাগানো কঠিন হয়ে গেছে। অনেক কষ্ট হলেও কাজ তো করতেই হবে।' সোনাতলা গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, 'জমিতে কাজ করতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। গত সাত থেকে আট দিন থেকে বেশি শীত পড়েছে। কাদা-পানিতে নেমে কাজ করতে গিয়ে হাত-পা হিম হয়ে যাচ্ছে। কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।' নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী মাঠে ধান রোপণ এর কাজ করছিলেন জাহিদুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, রমজান হোসেনসহ ১০ থেকে ১২ জন কৃষক। জানতে চাইলে তারা বলেন, শীত আর কুয়াশার কারণে জমিতে কাজ করা যাচ্ছে না ঠিকমতো। কিছুক্ষণ পরপর কাজ বন্ধ করে জমির ধারে এসে আগুন পোহাতে হচ্ছে। ফলে সঠিক সময়ে ধান রোপণ করা মুশকিল হবে। জেলার বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুর রহমান বলেন, 'গত কয়েক দিন ধরেই আবহাওয়া খুবই নিম্নে অবস্থান করছে, ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকছে। ফলে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আরও বেশ কয়েক দিন শীত ও কুয়াশার তীব্রতা থাকবে।' মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, উপজেলায় এবার ২৮ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ২৭ হাজার ৬৫ ও হাইব্রিড এক হাজার ১৯০ হেক্টর। এ পর্যন্ত ১৯০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবার জেলায় ১ লাখ ৯১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেহেতু এখন বোরো লাগানো শুরু হয়ে গেছে, চারাও রোপণ যোগ্য হয়ে উঠেছে। ফলে এখন আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে বীজতলা নষ্ট হবার সম্ভাবনা নেই। আর যাদের চারা এখনো ছোট আছে, তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন বিকালে বীজতলা ঢেকে রেখে সকালে বেলা বাড়ার সঙ্গে খুলে দিতে।