ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই জমে উঠেছে পিঠা ব্যবসা। শহরের বিভিন্ন ফুটপাতে প্রায় শতাধিক দোকানে সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে হরেক রকমের পিঠা বিক্রির ধূম। শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুটপাত থেকে পিঠা কিনে খায়। আবার কেউ কেউ অর্ডার দিয়ে পিঠা তৈরি করে বাড়িতে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, শহরের বিভিন্ন ফুটপাতের বেশ কয়েকটি দোকানে সারা বছরই পিঠা বিক্রি করা হয়। তবে শীতকালে বেড়ে যায় পিঠার দোকানের সংখ্যা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পৌর শহরের সড়ক বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ফুটপাত ও শহরের বিভিন্ন মহলস্নার মোড়ের পিঠা বিক্রি করা হয়। পিঠা ব্যবসায়ী সকাল ১০টার পর থেকেই চুলা ও বাক্স নিয়ে বসে যান ফুটপাতে। এসব দোকানে চিতল পিঠা (চিতই), চুয়া পিঠা (মেরা পিঠা), ভাপা পিঠা, পোয়া পিঠা (তেলের পিঠা) ও পাটিসাপটা পিঠা করা হয়। তবে ক্রেতাদের কাছে চিতল পিঠা ও ভাপা পিঠারই কদর বেশি। প্রতিটি বড় সাইজের ভাপা পিঠা ১৫ টাকা ও ছোট সাইজের ভাপা পিঠা ১০ টাকা, চিতল পিঠা ১০ টাকা, ছোট সাইজের চিতই পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এছাড়াও চুয়া পিঠা প্রতিটি ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। শহরের শ্রমজীবী মানুষরাই মূলত এসব পিঠার ক্রেতা। এছাড়াও শহরে শপিং করতে আসা গৃহিণীরা চাহিদা মতো পিঠা কিনে বাসায় নিয়ে যান। বিভিন্ন পাড়া-মহলস্না থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসেন ফুটপাতে পিঠা কিনতে।
শহরের আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনের পিঠা বিক্রেতা আকবর আলী জানান, প্রতিদিন তিনি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা লাভ হয়। আগে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ কেজির চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করলেও বর্তমানে ৭ থেকে ৮ কেজি বিক্রি করতে পারেন।
আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনে পিঠা কিনতে আসা রফিক ও জুয়েল নামের দুই বন্ধু জানান, তাদের বাড়ি জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে। তারা হোস্টেলে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। শীতের দিনে বাড়িতে মা-চাচিরা তাদের হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতেন। হোস্টেলে থাকায় তারা এখন মা-চাচির হাতে তৈরি পিঠা খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সুযোগ পেলেই তারা ফুটপাত থেকে পিঠা কিনে খান।