জুয়ায় হেরে অপহরণ, মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা, আটক ৩

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় ফয়সাল হোসেন (২৩) নামের এক যুবক অনলাইনে জুয়ার নেশায় পড়ে অনেক টাকা খুইয়ে দেনায় পড়ে যান। সেই টাকা জোগাড় করতে গিয়ে নিজের আপন চাচাত ভাই চার বছরের শিশু সালমানকে অপহরণ করে। এরপর মুঠোফোনের মেসেজে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একপর্যায়ে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজের ঘরে বাক্সের ভেতর লুকিয়ে রাখে ফয়সাল। এমনই এক লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা থানার সাদুলস্নাপুর ইউনিয়নের আলোকচর গ্রামে। গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে নিখোঁজ হয় শিশু সালমান। আর পরদিন মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ফয়সালের ঘরের বাক্সের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় জড়িত ফয়সালসহ তার বাবা-মাকে পুলিশ আটক করেছে। নিহত শিশু সালমান আলোকচর গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক আবুল হাশেমের ছেলে। আর ফয়সাল একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন শাহাদতের ছেলে। নিহত শিশু সালমান ও অভিযুক্ত ফয়সাল সম্পর্কে আপন চাচাত ভাই। তাদের বাড়িও পাশাপাশি। আটকরা হলেন- আনোয়ার হোসেন শাহাদত-(৪৮), তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুন-(৪০) ও ছেলে ফয়সাল হোসেন-(২৩)। আটকের পর শিশু সালমানকে অপহরণ, হত্যা এবং হত্যার কারণ সম্পর্কে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেয় ফয়সাল। নিহত শিশু সালমানের বাবা আবুল হাশেম বলেন, 'সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাচ্চার কান্না শুনে বাইরে বের হয়ে দেখি সালমানের হাত ধরে আছে ফয়সাল। পরে বাইরে বের হয়ে আর ছেলেটাকে খুঁজে পাইনি। ফয়সালকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, সালমানকে পরে আর দেখেনি। এর মধ্যেই আমার আরেক ভাই সাদ্দাম হোসেনের মোবাইল ফোনে মেসেজ আসে ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। ১০ লাখ টাকা নিয়ে আতাইকুলা-সুজানগর সড়কের হিজলতলা নামক স্থানে টাকা রেখে সালমানকে নিয়ে যেতে হবে। পরে আতাইকুলা থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ মেসেজের সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিকালে প্রথমে ফয়সালকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সালমানকে অপহরণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে ফয়সাল। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘরের বাক্সের ভেতর থেকে সালমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আতাইকুলা থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, আটক ফয়সাল পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, অনলাইনে জুয়ায় হেরে অনেক টাকা দেনা হয়ে গেছে। সেই টাকা জোগাড় করতে সালমানকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। আটক ফয়সাল ও তার বাবা-মাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।