খুলনা ও মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সকালে বৃষ্টি হয়। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ চরম বিপাকে পড়ে। স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরাও যেতে পারেনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তীব্র শীত ও বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ফাঁকা রয়েছে। আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও স্টাফ রিপোর্টারের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-
খুলনা অফিস জানিয়েছে, খুলনায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর হঠাৎ করেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নামে। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও অফিসগামী মানুষকে।
খুলনার আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, 'আমরা আগে থেকে বার্তা দিয়ে আসছি ১৮ জানুয়ারি খুলনায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশে মেঘ জমার কারণে খুলনা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। আজ শুক্রবারও আকাশ মেঘলা থাকবে।
তিনি জানান, খুলনায় চলতি বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বুধবার ১১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার আকাশ মেঘলা থাকলেও তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। এদিন খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ২০ জানুয়ারির পর আবারও তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এ সময়ে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর জানান, মাদারীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জানা গেছে, তীব্র শীতে মাদারীপুর সদর, শিবচর, রাজৈর, কালকিনি ও ডাসার উপজেলার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও নিম্ন আয়ের মানুষ খুবই ভোগান্তির স্বীকার হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডাজনিত রোগে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বৃষ্টি ও কুয়াশার কারণে কৃষিজাত পণ্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
আলী হোসেন রিপন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, সকালে বৃষ্টি ও শীতের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারেননি। দুপুরের দিকে বৃষ্টি কমে গেলে ঘর থেকে বের হন। এ বছর মাদারীপুরে প্রচুর শীত পড়ছে। তীব্র শীতে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।
মাদারীপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে শূন্য দশমিক আট মিলি। আগামী দুই-তিন দিন পরে মাদারীপুরের তাপমাত্রা আরও অনেক কমে যাবে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।