চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় রাতের অন্ধকারে পাহাড় কেটে সাবাড় করছে একটি চিহ্নিত মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। পাহাড় কাটার সঙ্গে এই সিন্ডিকেট উজাড় করছে সরকারি মূল্যবান প্রজাতির বনজ বাগানের গাছ। পাহাড় কেটে দেদারছে মাটি বিক্রির সঙ্গে সমানতালে কেটে নিয়ে যাচ্ছে মূল্যবান গর্জনের মাদার ট্রি।
সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বড়দুয়ারা মইন্নার টেক এলাকায় বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের গা ঘেঁষে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার এই যজ্ঞ চলছে। পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষেধ ও দন্ডনীয় অপরাধ হলেও তা' মানছে না এই সিন্ডিকেট। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ডাম্পারযোগে এলাকার মানুষের চাহিদা মোতাবেক ভিটা ও পুকুর ভরাটে তারা মাটি সরবরাহ করছে। বিষয়টি চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বড়দুয়ারা বিট কর্মকর্তাকে বারবার অবহিত করলেও রহস্যজনক কারণে এই অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
ইতোমধ্যে পদুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে একবার ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুটি ডাম্পার ও তিনজন শ্রমিক আটক করা হয়। এরপর কিছুদিন পাহাড় কাটা বন্ধ থাকলেও কয়েকদিনের মাথায় পুনরায় দ্বিগুণ উদ্যমে কাটা শুরু হয়।
এ ব্যাপারে বড়দুয়ারা বিট কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'বিটে জনবল স্বল্পতার কারণে শক্তিশালী এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া তারা সবাই সরকারি দলের লোকজন। পাহাড় কাটার সময় সিন্ডিকেটের লোকজন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থাকে।'
তিনি আরও জানান, 'সাতকানিয়া পুলিশ প্রশাসন ওই এলাকায় অভিযানে সহযোগিতা করছে না। এটা আমার বিটের আওতাধীন এলাকা হলেও বান্দরবান জেলার ভেতর। যেহেতু সাতকানিয়া বর্ডারের বাইরে বান্দরবানের প্রশাসনিক এলাকা, সেহেতু সাতকানিয়া থানা পুলিশ ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করতে নারাজ।'
যোগাযোগ করা হলে পাহাড় কাটার মূলহোতা জাহেদুল ইসলাম বলেন, 'আমিতো মাটির ব্যবসা করি না। তবে মইন্যার টেক এলাকায় যে পাহাড় কাটা হচ্ছে, সেই পাহাড়ের পাশে আমার মৎস্য খামার এবং দোকান রয়েছে। খামারে এবং দোকানে আসা যাওয়ার পথে লোকজন হয়তো আমাকে দেখেছে। এজন্য পাহাড় কাটার সঙ্গে আমি জড়িত আছি ভাবছে। প্রকৃতপক্ষে আমি পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত নই। কারা কাটছে, সেটাও আমি জানি না।'