গোদাগাড়ীতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে শীতকালেও রাস্তায় পানি
প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা রেলবাজার। এখানে খুব ভোর থেকেই পাইকারি মাছের বাজার বসায় জনসমাগম ব্যাপক হয়। অন্যদিকে একই জায়গায় রয়েছে কাঁচা সবজির বাজার। ফলে উপজেলাসহ বাইরের এলাকা থেকে এই বাজারে অসংখ্য জনসাধারণের যাতায়াত হয়।
বেশ কয়েক মাস থেকে এই বাজার থেকে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্য পড়েছে জনসাধারণ। এই বাজারেই রয়েছে বৃহৎ মৎস্য আড়ত। এখানে পাইকারি মাছ ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম হওয়ায় মাছের পানি প্রভাবিত হয়। এসব পানি মাছের হওয়ায় দুর্গন্ধময় হয়। এছাড়াও কাঁচা বাজারের যেসব ব্যবসায়ী আছে তাদেরও ব্যবহৃত পানি এই ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত হতো।
ড্রেনের মুখে গোদাগাড়ী বিজিবি ক্যাম্প হওয়ায় এসব দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ বিজিবি কর্তৃপক্ষ। পানি নিষ্কাশনের জন্য গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়রের কাছে বারবার অনুরোধ করেও কোনো পরিত্রাণ না পাওয়ায় ড্রেনে বস্তা ও বালু ফেলে বন্ধ করে দিয়েছে গোদাগাড়ী বিজিবি ক্যাম্প। গত রোববার গোদাগাড়ী বিজিবি ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করে দিলে আরও দুর্ভোগে পরে এলাকাবাসী। কনকনে শীত উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ কষ্ট করেই পানির মধ্যে পা ডুবিয়ে বাজারে যাচ্ছেন। এছাড়াও বাজারে আসা মিনিট্রাক, পিকআপ, অটোরিকশা, সাইকেল-মোটর সাইকেল পানির ওপর দিয়ে যাচ্ছে। আবার ওই এলাকার স্কুল-কলেজে পড়া ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মৎস্য আড়তদাররা অভিযোগ করেন, তারা সবাই মিলে ও বিজিবি কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার সমাধানের জন্য কয়েকবার গেলেও তেমন কোনো প্রতিকার মেলেনি।
রেলবাজার মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'পানি যাওয়ার ড্রেনটি বিজিবি কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেওয়ায় আমরাসহ জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছি। বিজিবি কর্তৃপক্ষসহ আমরা সমস্যা সমাধানের জন্য গোদাগাড়ী পৌর মেয়রের কাছে গিয়েছি। তিনি আমাদের কাছে টাকা চেয়ে কাজ কারার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা নিয়মিত পৌর ট্যাক্স-কর দিই। এছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স নিয়মিত নবায়ন করি। অনেক টাকা তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে দেয়। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ টাকা চেয়ে কাজ করে দেওয়ার কথা বলেছে। এই কাজটি পৌর মেয়রের করে দেওয়ার দায়িত্ব। আমরা দ্রম্নত এর সমাধান চাই।'
গোদাগাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সোলাইমান বলেন, 'মাছের পানির পচা দুর্গন্ধে আমাদের এখানে থাকা খুবই মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। কয়েকবার পৌর মেয়র অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের কাছে গিয়েছি, কোনো সমাধান পাইনি। এছাড়াও বাজার কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয়ে অবহিত করেছিলাম। বিজিবি ক্যাম্প একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সিও স্যার আমাদের ক্যাম্পে আসলে দুর্গন্ধের বিষয়টি তার নজরে পড়লে তার নির্দেশনায় ড্রেনের মুখ বালি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দেখি রাস্তার ওপর দিয়ে হাঁটু সমান পানি প্রভাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। পুনরায় মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে ড্রেন কেটে পানি নিষ্কাশন করা হয়েছে। আবারও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রম্নত সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী পৌর মেয়র অয়েজ উদ্দীন বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ড্রেন করতে গেলে সময়ের ব্যাপার। পস্নানিংপাস, অর্থ বরাদ্দসহ নানা বিষয় আছে। আমি বাজার কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আপাতত সমস্যা নিরসনের জন্য তারা কিছু টাকা দেবে। তবে কেউ তারা রাজি হয়নি। আমি এখন ঢাকায় আছি। ফিরে এসে আবারও বিষয়টি দেখব।'