বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকায় নিম্নমানের রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। রাস্তাটি নির্মাণ কাজের মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার ১৫ দিন পর রাতের আঁধারে দ্রম্নত রাস্তাটির কার্পেটিংয়ের কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এতে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানেই রাস্তাটির কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। তবে রাস্তাটি নির্মাণের সময় অনিয়মের বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে স্থানীয় সরকারের করোনা প্রকল্পের আওতায় ধুনট বাজারের ফলপট্টি থেকে ধুনট থানা মোড় পর্যন্ত ১৫০০ মিটার রাস্তা নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করে ধুনট পৌরসভা। রাস্তাটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৬৭ টাকা। ধুনটের জননী কন্সট্রাকশন রাস্তাটি নির্মাণের অনুমোদন পায়। রাস্তাটির নির্মাণের মেয়াদকাল ছিল ২০২৩ সালের ২৫ জুন থেকে ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই ঠিকারদার প্রতিষ্ঠান গত তিন মাস আগে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রাস্তাটির কাজের দরপত্র অন্য এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেন। অভিযোগ রয়েছে রাস্তাটির দরপত্র ক্রয়ের পর সাব ঠিকাদার রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইটের খোয়া, মাটি মিশ্রিত পাথরের গুঁড়া, নিম্নমানের বিটুমিন ও বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যবহার করেছেন। এছাড়া রাস্তাটির পুরত্ব ১৫ মিলি হওয়ার কথা থাকলেও তা সরেজমিন ৮ মিলি পর্যন্ত দেখা গেছে।
ধুনট থানা মোড় এলাকার বাসিন্দা আজিজার রহমান ও মজনু মন্ডল জানান, এই সড়ক দিয়ে ধুনট থানা, ধুনট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও দুটি কলেজসহ জেলা সদরে যাতায়াত করতে প্রতিদিন হাজারো যানবাহন চলাচল করে। গত পাঁচ দিন আগে রাস্তাটি দ্রম্নত করে নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি রাতের আঁধারেও তারা কাজ করেছে। রাস্তাটি নির্মাণের সময় পৌরসভার কোনো ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদান বা সংশ্লিষ্ট কেউই সেখানে ছিল না। তাই তারা ইচ্ছেমতো নিম্নমানের কাজ করেই চলে গেছে। আর এ কারণে বিভিন্ন স্থানে এখনই ভেঙে যাচ্ছে। গাড়ির চাকায় রাস্তার কার্পেটিংয়ের খোয়াগুলো উঠে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ধুনট পৌরসভার প্রকৌশলী সাজেদী হক বলেন, রাস্তাটির কাজ বিক্রি করে দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তবে জ্বালানি বেশি হওয়ার কারণে কাজ কিছুটা খরাপ হয়েছিল। এছাড়া নিম্নমানের কাজ করা হলে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ধুনটের জননী কন্সট্রাকশনের প্রোপাইটর ফরহাদ হোসেনের বক্তব্য নিতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশাহ বলেন, রাস্তাটি সঠিকভাবে নির্মাণ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার বলা হয়েছিল। তারপরও কোনো অনিয়ম হলে বিশ্বব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা ব্যবস্থা নেবেন।
বিশ্বব্যাংকের করোনা প্রকল্পের বগুড়া জেলার সুপার ভিশন ইঞ্জিনিয়র ইহসাক সরকার বলেন, নিম্নমানের কাজ করা হলে অবশ্যই তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।