চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রায় ৪০০ হেক্টর কৃষি মাঠে চাষাবাদ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। বিএডিসির সেচ প্রকল্পের মটর থাকলেও পরিচালনার অভাবে কৃষকদের ইরি বোরো চাষাবাদে তেমন কোন কাজে আসছে না। তাইতো স্ক্রিম ম্যানেজার ও স্থানীয় কৃষকদের প্রাণের দাবি পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার বাস্তবায়ন করতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ১১নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের পাতানিশ, নোয়াপাড়া, সাদিপুরা চাঁদপুর ও সীমান্তবর্তী কচুয়া উপজেলার কালচোঁ এ চার গ্রামের ৪২০ হেক্টর কৃষি মাঠ। পানি নিষ্কাশনের জটিলতার কারণে এ মাঠের কিছু অংশে দুই ধরনের ফসল উৎপাদনের সুযোগ থাকে। গত কয়েক বছর ধরে সেচ প্রকল্পের জটিল দেখা দিলে অনেক আবাদি জমি চাষাবাদ ছাড়াই পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরই মধ্যে উপজেলা বিএডিসি আওতায় মাঠের কিছু অংশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সঠিকভাবে পানি পাচ্ছেন না এখানকার কৃষক। তাছাড়া গত বছর বিএডিসি পাম্প থেকে পানি না উঠার দুর্ভোগে অনেক কৃষক চাষাবাদ করতে পারেননি।
গত শনিবার এ মাঠের পাতানিশ ও কালচোঁ কৃষি মাঠে স্থানীয় স্ক্রিম ম্যানেজার দিদার হোসেনের প্রতিনিধি রাশেদের নেতৃত্বে আগের ড্রেনে ভেকু লাগিয়ে সেচের পানি লাইনের কাজ করা হচ্ছে। মূলত সমতালভাবে দূরবর্তী আবাদি জমিতে পানি প্রবেশের জন্যই কৃষকদের সুবিধার্থে এমন সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছে স্ক্রিম কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় কৃষক মুকলেছুর রহমান, মেহেরাজ ও মালেক মিয়া বলেন, 'আমাদের চার গ্রামের বৃহত্তর এ কৃষি মাঠে প্রায় ৪০০ একর আবাদি জমি রয়েছে। আগে এ মাঠে অনেক ধান হতো। বর্তমানে পানি নিষ্কাশনের জটিলতা দেখা দেওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই কৃষকদের চাষাবাদের কথা মাথায় রেখে পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।'
মাঠ স্ক্রিম ম্যানেজার দিদার হোসেন বলেন, 'হাজীগঞ্জ-কচুয়া সীমান্তে পাতানিশ, নোয়াপাড়া, চান্দু, কালচোঁ গ্রামের ৪২০ হেক্টর কৃষি মাঠ পানি নিষ্কাশনের দুর্ভোগে ভুগছেন স্থানীয় কৃষক। তাদের চাষাবাদের সুবিধার্থে আমরা ভেকু লাগিয়ে ড্রেন চালু করছি। পাকা ড্রেন হলে আর প্রতি বছর এ ভাবে ভেকু বসাতে হবে না।'
স্থানীয় ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া বলেন, উপজেলা বিএডিসি আওতায় সেচ পানির জন্য যে মোটর লাইন সরকার দিয়েছে তা ঠিকমত কাজ করছে না। মূলত ড্রেন পাকা করে যদি বৃহৎ লাইন করা যায় তাহলে কৃষকরা সঠিকভাবে জমিতে পানি পাবেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএডিসি অফিসার মামুনুর রশিদ বলেন, 'আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বৃহত্তর এ কৃষি মাঠে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা করব।'
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলেন, 'আমাদের এ মাঠে দুই ধরনের ফলন হয়। দেখা যায় দক্ষিণ অঞ্চলের ধান কাঠার সময় হলে উত্তর অঞ্চলের কৃষকরা জমিতে ধান রোপণ করেন। তার পরেও কৃষকদের সুবিধার্থে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার জন্য সুপারিশ রাখব।'