টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনার মাটিকে বলা হয় সাদা সোনা। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের পুরো গাবসারা ইউনিয়নসহ ৩টি ইউনিয়ন যমুনাবিধৌত চরাঞ্চল। এক সময়ে নদী এপার ভাঙত ওপার গড়ত। যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং এর শক্তিশালী গাইডবাঁধ নির্মাণের ফলে ভাঙা-গড়া সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবুও প্রতিনিয়ত যমুনা নদীতে জন্ম নিচ্ছে পলি মাটি ও বেলে মাটি। পলিতে ফলছে সোনার ফসল। আর মুক্তোর দানার মতো চিকচিকে সাদা সোনাখ্যাত বালি দিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তাই স্থানীয়দের ভাষায় যমুনার এই অংশকে বলা হচ্ছে- 'স্বর্ণ ডিমের হংসী'।
ভূঞাপুরের সাদাবালি দেশ বিখ্যাত। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভালুকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এর ব্যাপক চাহিদা। রাতদিন হাজার হাজার ট্রাক সাদা বালি যাচ্ছে এখান থেকে। এর মধ্যে মোটাবালি, চিকনবালি এবং নৌকারবালি যাচ্ছে ঢালাই ও আস্তরের কাজে। চিকনবালি ও ভিটবালি যাচ্ছে রাস্তা নির্মাণ, গর্ত ও ঘরের মেঝে ভরাটের কাজে। মোটাবালি, নৌকারবালি ও সারিয়াকান্দিী বালি যাচ্ছে আস্তর, গাঁথনি ও ঢালাইয়ের কাজে।
ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে যমুনার নৌকারবালি, চিকনবালি ও মোটাবালিতে জামালপুর ও নেত্রকোনার লালবালি মেশাতে হয়। কিন্তু সারিয়াকান্দির পিওরবালি হলে জামালপুর ও নেত্রকোনার লালবালি ব্যবহার না করলেও চলে। কারণ সারিয়াকান্দির বালি একটু লালচে এবং এর দানা বেশ মোটা হয়ে থাকে।
টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় থেকে বঙ্গবন্ধুসেতু-ভূঞাপুর আন্তজেলা মহাসড়ক ধরে উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে ৫শ' গজ পর থেকেই প্রায় ৫ কিলোমিটার দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গরুরহাট গোবিন্দাসী পর্যন্ত অনেকগুলো বালিরঘাট পাওয়া যাবে। যে কোনো ঘাট থেকে পছন্দের বালি নেওয়া যাবে।
বালি পরিবহণের জন্য ট্রাক নিয়ে যাওয়া যায়। আবার বালির ঘাটেও ট্রাক ভাড়া পাওয়া যায়। প্রয়োজন মতো দশ চাকার ট্রাক, জামবাডি ও হাইড্রোলিক ভাড়া নেওয়া যাবে। দূরত্ব ভেদে ভাড়াও কম-বেশি হয়ে থাকে।
বালি ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের জানান, বালির মূল্যসহ দূরত্ব বুঝে দশ চাকার ট্রাক, জামবডি ও হাইড্রোলিক ভাড়ার পার্থক্য হয়ে থাকে। তবে বালি কেনার সময় পছন্দমতো দেখে নেওয়া ভালো।