গাংনীতে স্মার্ট জাতের টমেটোর চাষ
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে সারা দেশে
প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর)
প্রতি বছরই আগাম জাতের সবজি চাষে বেশি মুনাফা অর্জন করলেও এবার আগাম ও উন্নত স্মার্ট-১২১৭ জাতের টমেটো চাষে বাজিমাত করেছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক সজিব রহমান। ইতোমধ্যে দেড় লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আরও লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী। উন্নত জাত ও সঠিক পরিচর্যা ও কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেলে সবজি চাষিদের ভাগ্য বদলাতে পারে এমন প্রত্যাশা তার। নতুন ও উন্নত জাতের ফসল চাষে মাঠ দিবসের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এমন দাবি কৃষি অফিসের।
মেহেরপুর জেলায় এ-ই প্রথম স্মার্ট-১২১৭ জাতের টমেটো আবাদ করেছেন ভাটপাড়া গ্রামের আকবর আলীর ছেলে কৃষক সজিব রহমান। তিনি জানান, এক বীজ কোম্পানির মাঠ দিবসে অংশগ্রহণ করে স্মার্ট-১২১৭ জাতের হাইব্রিড টমেটোর বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। পরে পরীক্ষামূলক এক বিঘা জমিতে এ জাতের টমেটোর চারা রোপণ করেন। তিন মাস যেতে না যেতেই গাছে আসে ফুল ও ফল। প্রতিটি গাছের পাতার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলতে দেখা যায় টমেটো। গাছ ঠেকাতে গাছের সঙ্গে বেঁধে দিতে হয় বাঁশের খুঁটি। ইতোমধ্যে তিনি দেড় লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। এখনো জমিতে লক্ষাধিক টাকার টমেটো রয়েছে।
কৃষক সজিব রহমানের টমেটো চাষে বাজিমাতের খবরে অনেকেই আসছেন তার কাছে পরামর্শ নিতে। সবজি চাষি শাহীন জানান, অন্যান্য জাতের টমেটো চাষে লাভ হয়। তবে স্মার্ট জাতের টমেটো চাষে প্রায় তিন গুণ লাভ সম্ভব। এবার দুই বিঘা জমিতে এ নতুন জাতের টমেটো আবাদ করবেন বলে জানান তিনি।
সবজি চাষি কাবিরুল ইসলাম জানান, শুধু স্মার্ট-১২১৭ জাতের টমেটো নয়, অনেক উন্নত জাত আছে যা চাষিরা জানেন না। বিভিন্ন বীজ কোম্পানির উদ্যোগে চাষিরা আবাদ সম্পর্কে যে টুকু ধারনা পেয়ে থাকেন শুধুমাত্র সেটুকুতেই সীমাবদ্ধ। স্থানীয় কৃষি অফিস যদি সেসব সম্পর্কে ধারনা দেয়, তাহলে এই অঞ্চলে সব আবাদেই চাষিরা লাভবান হতে পারেন
কৃষি অফিসের হিসাব মতে, এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি আগাম জাতের টমেটো চাষ হয়। তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য বারি টমেটো-৪, বারি টমেটো-৫, রোমা ভিএফএম রোমারিও, টিপু সুলতান, গ্রেট পেলে, ডেল্টা এফ-১, নিউ রুপালি এফ। এগুলো ভরা মৌসুমি জাত। শীতকালে স্বাভাবিকভাবেই এসব জাতের টমেটো আবাদ হয়ে থাকে। সেপ্টেম্বও থেকে অক্টোবর মাসে বীজ বপনের পর অক্টোবর-নভেম্বরে চারা রোপণ করা হয়। এসব জাতের টমেটো গাছে ফুল ও ফল আসতে একটু দেরি করে। তাই ফলন নিয়েও হতাশায় থাকেন চাষিরা।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরান হোসেন জানান, চলতি বছরে ৬৫ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে। এতে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদন হবে। যা জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে চাষিরা লাভবান হবে। কৃষকদের পাশে থেকে মাঠ দিবসের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের জাত সম্পর্কিত নানা পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ।