মেহেরপুরে সূর্যমুখীর হাসি উৎফুলস্ন দর্শনার্থী

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

গোলাম মোস্তফা, মেহেরপুর
বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে মেহেরপুরের আমঝুপি বিএডিসির ডাল ও সবজি বীজ খামার। খামারে রোপিত সূর্যমুখী ফুল দেখতে এখন প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজারো ফুলপ্রেমী। প্রকৃতির এই আবিরাম সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতিদিনই সূর্যমুখী এই ফুলের সমারোহ দেখতে ভিড় জমাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমী ও তরুণ-তরুণীরা। দলবেঁধে বন্ধু-বান্ধবী কেউ বা পরিবার-পরিজন নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের বাগানে ছবি তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরেজমিন খামারে গিয়ে খামার কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরজুড়ে নানা ধরনের ডাল ও সবজির বীজ উৎপাদন হয়ে আসছে আমঝুপি বিএডিসির এই খামারে। উদ্দেশ্য সূর্যমুখীর তেল ও বীজের চাহিদা পূরণ। কয়েক বছরে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে কৃষি খামার ফুল প্রেমিদের পদচারণায় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মেহেরপুরের আশপাশের কয়েক জেলার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন এই সূর্ষমুখী বাগানে। দুই চোখ যতদূর যায় শুধু ফুলের সমারাহ, এ যেন হলুদ আর সবুজের মিলনমেলা। বাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। ফুলের এই আমন্ত্রণে দিনভর এই সূর্যমুখী বাগানে ভিড় করছেন কয়েক হাজার মানুষ। সূর্যের মতো হাসি দেওয়া হলুদ গালিচা ছড়ানো ফুলের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে প্রতিদিন বাগানে ভিড় করছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। কেউ আবার প্রিয় মুহূর্তকে মোবাইলফোনে স্মৃতি হিসেবে ধারণ করে রাখছেন। শুধু মেহেরপুর জেলার মানুষই এই সৌন্দর্য উপভোগ করছেন না আশপাশের জেলা থেকেও আসছে দর্শনার্থী। ফুলের সৌরভ উপভোগ করে খুশি দর্শনার্থীরা। খামারের উপ-সহকারী পরিচালক আবু তাহের সরদার জানান, গত কয়েক বছর ধরে এই বীজ খামারে সুর্যমুখীর বীজ তৈরির জন্য আবাদ করা হয়। যখন ফুল ফোটে তখন দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। দর্শনার্থীরা যাতে ফুলের ক্ষতি না করে সে জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। তবে দর্শনার্থীরা ফুল দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে সূর্ষমুখী চাষে। তিনি আরও জানান, সূর্যমুখী এক ধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮ ফুট) হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মতো এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ। এর বীজ হাঁস-মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয়। তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভূমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় শীতকালীন শস্য হিসেবে চাষ করা হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে সূর্যমুখী একটি তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে আবাদ হচ্ছে। সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভালো এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।