পটুয়াখালীতে শসা আবাদে বাজিমাত

গত বছর ৮ হেক্টর জমিতে হলেও এবার হয়েছে ১৩৬ হেক্টরে

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চাষ হচ্ছে শসা -যাযাদি
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পটুয়াখালী জেলায় বাড়ছে জনপ্রিয় সবজি শসার আবাদ। ফলে এখানকার কৃষকরা এখান মাঠে সারা বছরই শসা আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় অনেক কৃষক শসা আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এতে এই এলাকার কৃষকদের আর্থসামাজিক অবস্থার যেমন উন্নতি হচ্ছে পাশাপাশি জেলার বাইরেও এখন পটুয়াখালীর উৎপাদিত শসা সরবরাহ করা হচ্ছে। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী আঞ্চলিক সড়কের পাশে ১১ একর জমি ইজারা নিয়ে শসার আবাদ করেছেন কৃষি উদ্যোক্তা সীরাজ মীর। বাড়ি ভোলা জেলার নীলকমল ইউনিয়নে হলেও এবার তিনি এই এলাকায় শসা আবাদ করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সারা ফেলেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের কারণে এবার ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। কৃষি উদ্যোক্তা সীরাজ মীর বলেন, 'আমাদের এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ভালো না। তাই এই এলাকায় শসা আবাদ করছি। এখানে বিকালে শসা তুলে তা রাতের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো যায়। বিশেষ করে ঢাকার বাজার ধরতেই বেশি চেষ্টা করি। আর এখানে নারী-পুরুষসহ অনেকে কৃষি শ্রমিক পাওয়া যায়। যে কারণে এখানে কৃষি কাজের পরিবেশ ভালো।' তিনি আরও জানান, এবার এই এলাকায় ১১ একর জমিতে শসা আবাদে প্রায় ২৩ থেকে ২৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যদি প্রতি কেজি শসা ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করা যায়। তবে অর্ধকোটি টাকার শসা বিক্রি করা সম্ভব হবে। আর যদি শসার কেজি ১২ থেকে ১৩ টাকায় নেমে আসে তবে চালানের টাকা আসবে। আর ১০ টাকার নিচে দাম আসলে লস হবে বলেও জানান এই কৃষি উদ্যোক্তা। শুধু সীরাজ মীর নয়, এই এলাকার অনেকেই তার দেখাদেখি শসা আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই আধুনিক কৃষিতে নিজেদের নিয়োজিত করছেন। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে শসা আবাদের কারণে কৃষি ক্ষেত্রে অনেকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষকরা গৃহস্থ বাড়িতে শসা আবাদ করলে সেটা মাচা পদ্ধতিতে করে থাকেন, তবে সীরাজ মীর সরাসরি জমিতেই শসার লতা বিছিয়ে দিচ্ছেন এবং সেখান থেকেই শসা সংগ্রহ করছেন। এ কারণে কৃষকদের কাছে এই পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয় এবং লাভজনক। পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় শীতকালীন তরমুজের পাশাপাশি কৃষক হাইব্রিড জাতের ডেইজি, ময়নামতি, সুপ্রিম পস্নাস ও সুমাইয়া জাতের শসার চাষ হচ্ছে। গেল বছর জেলায় আট হেক্টর জমিতে শসার চাষ হলেও, চলতি বছর ১৬৩ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় তা এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। পটুয়াখালীর বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও কৃষকরা মাঠ পর্যায়ে এখন বিক্রি করছেন ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে। আর আগামী রমজান মাসকে উদ্দেশ্য করে অনেকেই নতুনভাবে শসার আবাদ করছেন।