গরম কাপড়ের আকুতি রাহেলা বেগমের

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের তিস্তা নদীর পাড়ে জবুথবু হয়ে বসেছিলেন রাহেলা বেগম (৬০)। শরীরে শীত নিবারণের কোনো কাপড় নেই। নদী পাড়ের ঠান্ডা বাতাসে কাঁপছিলেন তিনি। পরনে ময়লাযুক্ত শাড়ি আর ছেঁড়া পাতলা চাদর। রাহেলা বেগম বলেন, 'এই একটাই কাপড় আছে। রাতে এই কাপড় পেঁচিয়ে শুয়ে থাকি। শীতের আর কাপড় নেই। ঠান্ডা লাগলে কি আর করব। সন্ধ্যায় আগুন জ্বেলে শরীর গরম করি। আগে শীত আসলে কম্বল পেতাম, এ বছর একটাও কম্বল পাইনি। এক কাপড়ে শীত যায় না, কেউ কাপড় দিতেও আসে না। কাপড় কেনার সাধ্য নেই। অনেক কষ্ট হয়।' খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাহেলা বেগম চোখে স্পষ্ট দেখতে পান না। চোখের জন্য প্রতি মাসে হাজার টাকার বেশি ওষুধ কিনতে হয়। রাহেলার গ্রামের বাড়ি কাশিরাম। তার এক ছেলে আছে। তবে সেও ভালোভাবে খোঁজ রাখে না। কোনো রকম মানবতর জীবনযাপন করছেন তিনি। স্থানীয় একজন ক্ষুদ্র মুদি ব্যবসায়ী জানান, এই এলাকায় এবার তেমন একটা কম্বল বিতরণ হয়নি। তাই কনকনে ঠান্ডায় সমস্যায় পড়েছে গরিব মানুষ। কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুধু রাহেলা বেগমই নয়, হাড়কাঁপানো এই শীতে গরম কাপড় না থাকায় কষ্ট পাচ্ছেন দরিদ্র ও অক্ষম মানুষ। গরম কাপড় কেনার সাধ্য নেই তাদের। হাত পেতে দু-একটা কাপড় পাওয়া গেলেও মিলছে না শীত নিবারণের কাপড়। তিস্তা পারের জলিল মিয়া বলেন, 'হাত পেতে যা পাই, তা দিয়ে তিনবেলা খাইতেই পাই না। শীতের কাপড়ের দাম বেশি; কেনার পয়সা নেই। ছেঁড়া কাপড়ে শীত যায় না।' শীতে পাতলা গেঞ্জি পরে কাঁপছিলেন। জানালেন, এ অঞ্চলে এবার শীত অনেক বেশি। হাঁটতে পারেন না; তাই পয়সাও পান না। খাবার দিলেও কম্বল দেয়নি কেউ। এবার শীতে কম্বল কম বিতরণের বিষয়টি নজরে এসেছে স্থানীয়দেরও। তারা জানান, এবার শীত বেশি হলেও কম্বল বিতরণ চোখে পড়ছে না। তবে এই কনকনে ঠান্ডায় কয়েক দিনে এই উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি, উপজেলা প্রশাসনসহ কোনো প্রকারের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে।