শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

অবৈধ ট্রাক্টরের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ শহরবাসী

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অবৈধ ট্রাক্টরের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ শহরবাসী

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও দুর্গাপুর পৌর দিয়ে শত শত বালু ভর্তি অবৈধ ট্রাক্টর (লড়ি) চলাচলের বিকট শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পৌর শহরবাসী। প্রতিদিন এসব ট্রাক্টর পৌর শহরের পশ্চিমে সোমেশ্বরী নদী থেকে বালু নিয়ে শহরের ওপর দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। বেশিরভাগ ট্রাক্টরের চালকের নেই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রায় ২৪ ঘণ্টাই শহরের ওপর দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করায় বিকট শব্দ ও হর্নের আওয়াজে রাস্তার উভয় পাশের বসতবাড়ির লোকজন চরমভাবে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।

প্রতিদিন ভোররাত থেকে গভীররাত পর্যন্ত একটানা বালুভর্তি ট্রাক্টরগুলো অবিরাম দ্রম্নতগতিতে চলতে থাকে। দিনের বেলায় অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ট্রাক্টর চলাচলে পৌরশহরে অবস্থিত ৯টি স্কুল, পাঁচটি মাদ্রাসা ও তিনটি কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারছে না।

দ্রম্নতগতির ট্রাক্টরের ভয়ে শিক্ষার্থীরা সর্বদা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাস্তা পারাপার হয়ে থাকে। বিশেষ করে দি চাইল্ড লার্নিং হোমস, দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দি চাইল্ড প্রিপারেটরি স্কুল, দ্বীনি আলীম মাদ্রাসা, সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়, দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিশুদের একা একা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে ভয়ে থাকতে হয় অভিভাবকদের। এ এলাকায় চারটি মসজিদের নামাজিরা বিকট শব্দে ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারে না। প্রতিদিন উপজেলা পরিষদগামী ও পৌরশহরের বাজারে যাওয়া মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা চলাচল করতে হয়। বালুভর্তি ট্রাক্টরগুলোর বিকট শব্দে আশপাশের বসতবাড়ির ছোট-ছোট শিশুরা দিনের বেলায় ঘুমোতেও পারে না। ধুলোয় বসতবাড়ির লোকজন শ্বাসকষ্ট ও শ্রবণজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

পৌর শহরের বাসিন্দা লিটন মিয়া জানান, 'আমার ঘুম ভাঙে লড়ির শব্দে আর ঘুমাতে যাই লড়ির শব্দে। ট্রাক্টরের ভয়ে রাস্তায় ঠিকমতো যাতায়াত করা যায় না। পৌরশহরের ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টর চলায় এমন অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিদিন। ট্রাক্টর এলেই রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনভিজ্ঞ ও কম বয়সি চালকরা পালস্না দিয়ে লড়ি চালানোর ফলে প্রায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।'

কৃষিবান্ধব সরকারের ভর্তুকি দেওয়া ট্রাক্টর জমি চাষাবাদ না করে মালবাহী হিসেবে ব্যবহার করায় প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। কেড়ে নিচ্ছে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীসহ বেশকিছু জনপ্রাণ। এ নিয়ে একাধিকবার মিছিল, মিটিং ও মানববন্ধনসহ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হলেও এর কোনো প্রতিফলন ঘটছে না। একদিকে যেমন শব্দদূষণ অন্যদিকে জনপ্রাণ কেড়ে নেওয়ায় এ আত্মঘাতী যন্ত্রটি নিয়ে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রশাসন কেনো কিছু করছে না, এ নিয়ে স্থানীয়রা নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, 'গত বুধবার মাসিক সমন্বয় সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পৌরশহরের ওপর দিয়ে ট্রাক্টর চলাচলের বিষয়টি সত্যি বেমানান। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে অচিরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে