ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারে ১০ মাঘ প্রতি বছরের মতো এবারও বসবে মাঘের মেলা। হজরত আহমদ উলস্নাহ মাইজভান্ডারির (কঃ) বার্ষিক উরস উপলক্ষে বসে এ মেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্ত আশেকানরা বিভিন্ন নিয়ত আর বিশেষ করে বাবার দেশের মুলা হিসেবে কিনে নিয়ে যান এ বিশাল আকৃতির জাপানি (ভান্ডারী) মুলা। এখানকার কৃষকদের দাবি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মুলা উৎপাদন হয় ফটিকছড়িতে।
প্রবাস থেকে ফেরা নাসির মোহাম্মদ ঘাটের কৃষক সোহেল উদ্দিন বলেন, 'ছোট থেকেই পরিবারের সঙ্গে চাষাবাদের কাজে জড়িত সে, তবে এসব ফেলে একপর্যায়ে পাড়ি জমান প্রবাসে। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারেন প্রবাস থেকে দেশে কৃষিকাজ করেই ভালো ছিল সে। তাই প্রবাস জীবন থেকে ছুটে নাসির মোহাম্মদ ঘাটের পাশে হালদার পাড়ে শুরু করেন জাপানি মুলা, লাল আলুসহ বিভিন্ন মৌসুমি জাতের সবজির চাষ। তবে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া জাপানি মুলার বাম্পার ফলন পেয়েছে সে। প্রবাস থেকে ফিরে তিন বছর ধরে এ জাপানি মুলা মাঘের মেলায় বিক্রি করে সফলতার মুখ দেখেছেন সোহেল।
মুলা ছাড়াও সোহেলের ক্ষেতে লাল আলু, কলা, মরিচ, আখ, মিষ্টি কুমড়ার ভালো ফলন হয়েছে। যা বাণিজ্যিকভাবে চট্টগ্রাম রিয়াজুদ্দিন বাজারে বিক্রি হয়।
২০২৩ সালে মুলা চাষে এক লাখ টাকা খরচ করে সাড়ে তিন লাখ টাকার মুলা বিক্রি করে। এ বছরও তার চেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়ার আশায় আছেন সোহেল।
বৃহস্পতিবার নাজিরহাট পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে নাসির মোহাম্মদ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়- হালদার চরে বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে শীতকালীন শাকসবজির চাষ। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য জাপানি মুলা এবং লাল আলু। প্রায় ১৫ জন কৃষক এ মুলা চাষে আছেন। কৃষকদের দেওয়া তথ্যমতে এ জাপানি মুলা ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। একেকটি মুলার দাম ৭০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বড় মুলার চাহিদা বেশি। বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ এবং আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, অন্যান্য এলাকার চেয়ে হালদার চড়ের মাটির গুণাগুণ ও বিশেষত্ব অনেক বেশি। নদীর পলি মাটির উর্বরতা ও হাইব্রিড জাতের বৈশিষ্ট্যের কারণে মুলার আকৃতি বড় হয়। ফটিকছড়িতে এবার ৪৯০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ হয়েছে। আমাদের কৃষি অফিসাররা নিয়মিত কৃষকের মাঠ পরিদর্শন করছেন।'