মহম্মদপুরে ঘোড়দৌড়ে উচ্ছ্বসিত মানুষ

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

এস আর এ হান্নান, মহম্মদপুর (মাগুরা)
মাগুরার মহম্মদপুরের বড়রিয়া গ্রামে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা -যাযাদি
পৌষের কনকনে শীতের মধ্যেও উৎসবমুখর ছিল এলাকার মানুষ। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না কারও মধ্যে। গ্রামীণ বিভিন্ন সড়ক ও মেঠোপথে মানুষের সারি। বেলা বারোটার পর থেকেই এমন চিত্র চোখে পড়ে। বিভিন্ন বয়সের ও নানান শ্রেণিপেশার অগণিত মানুষ আগ্রহভরে আসছেন। সবার উদ্দেশ্যই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করা। মাগুরার মহম্মদপুরের বড়রিয়া গ্রামে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ও শত বছরের প্রাচীনতম ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। এই ঘোড়দৌড় উপভোগে মানুষের ঢল নামে। দেশের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট কার্পেটিংসহ ইট বসানোয় ঘোড়দৌড়ের আয়োজনও কমে গেছে। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত বড়রিয়া গ্রামের কানাবিলের বিশাল মাঠজুড়ে অগণিত মানুষ। সব মানুষই অন্যরকম উচ্ছ্বাস-আনন্দে মাতোয়ারা। উৎসুক আমুদে দর্শকদের হাজার হাজার অপেক্ষমাণ চোখ। খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এবং শত বছরের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় উপভোগ করতেই হাজার হাজার দর্শক জড়ো হয়েছেন সেখানে। মনোমুগ্ধকর এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে কানাবিলে মানুষের ঢল নামে। অন্যরকম উৎসবমুখতায় মেতে ওঠেন হাজার হাজার আমুদে দর্শক। এ অঞ্চলের অন্তত ২০ গ্রামের মানুষের ছুটে যায় ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে। নানান এলাকা থেকে বিভিন্ন পথে লোকজন এসে জড়ো হয়। শিশু-কিশোর, ছেলে-বুড়ো ও নারীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ অভিন্ন উদ্দেশ্যে বিলের বিশাল মাঠে সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সবারই উদ্দেশ্য গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় উপভোগ করা। এদিন দুপুরের পর এমন চিত্রই চোখে পড়ে। প্রতি বছর বাংলা ২৮ পৌষ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে বড়রিয়া গ্রামে বিশাল এলাকাজুড়ে মেলা বসে। মেলায় লাখো মানুষের সমাগম হয়। স্থানীয় প্রবীণদের মতে, এবার একশ' পনের বারের মতো ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো। যশোর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, মাগুরা, ফরিদপুরসহ মহম্মদপুর উপজেলা ও উপজেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ২২টি ঘোড়ার উপস্থিতি দেখা গেছে। ঘোড়দৌড়ের পথে ঘোড়া মালিক, ফকির ও ছোয়াররা (জকি) ঘোড়াকে তার পথপরিক্রমায় প্রাথমিক মহড়ায় ব্যস্ত হয়ে উঠছেন। বেলা আড়াইটার সময় শুরু হয় কাঙ্ক্ষিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। ছোয়ারের বাঁশির ছন্দময় আওয়াজে দুরন্ত ঘোড়ার দল ছুটছে টগবগিয়ে, দুর্বার গতিতে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তা ও বিলের বিশাল প্রান্তরে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন ঘোড়দৌড়। কনকনে শীত উপক্ষো অন্যরকম উৎসব- আনন্দে মেতে ওঠেন দর্শকরা। দু'চোখ ভরে উপভোগ করেন মনোমুগ্ধকর এ দৌড় প্রতিযোগিতা। প্রাচীনতম এ মেলাকে ঘিরে শুধু বড়রিয়া নয়- উৎসব আনন্দে মাতেন আশপাশের অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ। মেলার মূল আকর্ষণ অর্থাৎ এতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় শুক্রবার বিকালে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও মেলা থাকবে আরও অন্তত এক সপ্তাহ। মেলা উপলক্ষে ঘরে ঘরে চলে পিঠা-পায়েশ তৈরিসহ নানান আয়োজন। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আত্মীয়-স্বজন আসেন। সবার মধ্যেই বিরাজ করে খুশির হিলেস্নাল।