মাতৃভাষার বই নিয়ে ক্লাসে ফিরছে উপজাতি শিশুরা
প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়েছে। এই রেওয়াজ অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির লংগদুতেও বিভিন্ন স্কুলে সাধারণ বইয়ের পাশাপাশি উপজাতি (চাকমা) শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের মাতৃভাষার বই তুলে দেওয়া হয়েছে এবং দীর্ঘ ছুটির পর উচ্ছ্বসিত হয়ে শ্রেণিতে পাঠে ফিরছে শিশুরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি পার্বত্যাঞ্চলের লংগদুতে চাকমা জাতিগোষ্ঠীর শিশুরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তাদের মাতৃভাষার বই পেয়েছে। এই বই পেয়ে এবং পাঠে ভীষণ আনন্দিত শিশুরা। ২০১৭ সাল থেকে শিশুদের নিজস্ব মাতৃভাষার বই বিতরণ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
সম্প্রতি উপজেলার মানিক্যপাড়া চিকনচান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বকুল কান্তি চাকমার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তার বিদ্যালয়ে চাকমা শিক্ষার্থীদের মঝে প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তিন শ্রেণিতে নিজেদের মাতৃভাষায় লেখা বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি নিজ ভাষার বই ক্লাস নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
অভিভাবকরা বলেন, 'আমরা তো নিজ ভাষায় পড়তে পারিনি। আমাদের ছেলেমেয়েদের নিজ ভাষার অক্ষর জানার সুযোগ হলো। নিজের ভাষায় বর্ণমালা সম্পর্কে জানতে পারবে, লিখতে ও পড়তে পারবে। সন্তানরা মাতৃভাষায় বই পাওয়ায় আমাদের খুবই ভালো লাগছে।'
নিজেদের ভাষা ও বর্ণমালা শিখতে ও সংরক্ষণে সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বই সঠিকভাবে পড়তে পারছে না বলে জানান অভিভাবকরা। তাই বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগেরও দাবি তাদের।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানা যায়, ২০২৪ সালে ৭ ইউনিয়নে ৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকমা সম্প্রদায়ের প্রাক প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকেই মাতৃভাষার বই দেওয়া হবে। বেশিরভাগই দেওয়া হয়েছে, তবে কয়েকদিনের মধ্যেই বাকিদের হাতে পৌঁছে যাবে তাদের নিজ ভাষার বই।
আরও জানা গেছে, দীর্ঘদিন বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এখন তারা নিজ ভাষার বইয়ে ক্লাসে ফিরছে। নতুন বছরের শুরু থেকেই ক্লাস কার্যক্রম চলমান থাকবে।
সচেতন নাগরিকরা জানান- এখন চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্য সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদেরও মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়া উচিত।