২৫টি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল চান আবু সাইয়িদ

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
২৫টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে ওইসব কেন্দ্রে আবার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন পাবনা-১ আসনে পরাজিত ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। সোমবার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগে এ দাবি জানান তিনি। লিখিত অভিযোগে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, পাবনা-১ আসনের ১২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৫টি ভোটকেন্দ্রে সরাসরি অনিয়ম করা হয়েছে। নির্বাচনী বিধিবিধান লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্র দখল ও ভোটকেটে সরাসরি ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এসব কেন্দ্রের ব্যালট পেপারের মুড়ি অংশটি পরীক্ষা করলেই এর সত্যতা প্রমাণিত হবে।' আবু সাইয়িদ বলেন, যেসব ব্যালট পেপার কেটে জাল ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, ওইসব ব্যালট পেপারের মুড়ি বই পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, মুড়ি অংশে ভোটারদের কোনো টিপসই ও ভোটার নম্বর নেই। এ ছাড়া অনেক ব্যবহৃত ব্যালট পেপারগুলোর পেছনে পিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর নেই।' তিনি বলেন, 'এসব কেন্দ্র ভোটারদের কেন্দ্রে আসায় প্রতিবন্ধকতা ও হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রত্যাশিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রে সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সহায়তা করেনি। বরং দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসন তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে।' অভিযোগপত্রে সুনির্দিষ্ট ২৫টি ভোটকেন্দ্রের নাম উলেস্নখ করে আবু সাইয়িদ বলেন, 'এসব ভোটকেন্দ্রের সঙ্গে অন্যান্য ভোটকেন্দ্রের তুলনা করলে দেখা যায়, ভোটকেটে নেওয়া-দেওয়ার কারণে ভোটের ব্যবধান বহুগুণে অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে নির্বাচনী ফলাফল জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।' উলিস্নখিত তথ্য-উপাত্তের আলোকে ভোটার ক্রমিক নম্বর না দেওয়া এবং প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর না থাকায় ভোটগুলো বাতিলযোগ্য। এমন পরিস্থিতিতে অবিলম্বের এসব ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিলপূর্বক পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। সেই সঙ্গে আবার নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ফলাফল সরকারিভাবে গেজেটভুক্ত না করার আবেদন জানান তিনি। এ বিষয়ে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, 'ভোটের দিন সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে এমন অনিয়ম দেখেছি। নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমি ভোট বাতিল ও পুনঃনির্বাচন চাই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। আশা করছি, তিনি এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রাখবেন।' স্বতন্ত্র প্রার্থীর এই অভিযোগের বিষয়ে মতামত জানতে নৌকার প্রার্থী ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি পাবনা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামানের। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিন বলেন, 'এমন কোনো বিষয় তার জানা নেই।' প্রসঙ্গত, রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে পাবনা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী শামসুল হক টুকু ৯৪ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৭ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩১ হাজার ৬১৬ জন। ভোটকেন্দ্র ১২৫টি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৬ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ৪ জন জামানত হারিয়েছেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাবনা-১ আসনে মোট গ্রহণকৃত ভোট ১ লাখ ৭০ হাজার ৬১৮। বাতিল হয়েছে ২ হাজার ৬৭৩ ভোট। ভোট পড়েছে ৩৯.৫৩%।