দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে জেলার আটটি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতে নৌকার প্রার্থী ও তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। গত রোববার রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত নির্বাচনী ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।
টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনের চূড়ান্তভাবে ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে নির্বাচিতরা হচ্ছেন-
টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে মোট ১৪৮টি কেন্দ্রের সবক'টির ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৭৪ হাজার ১২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আনোয়ারুল হক পেয়েছেন ৪ হাজার ১৭৮ ভোট।
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের ১৩৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৭টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছোট মনির নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪৮৬ ভোট। তিনি ভোটের দিন দুপুরে এ আসনের ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ব্যালট বাক্সে আগুন ও গুলির কারণে কাহেতা নামক কেন্দ্রটির ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের ১২৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানা ৮২ হাজার ৭৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. কামরুল হাসান খান পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৩৫ ভোট।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের ১১৩টি কেন্দ্রের ফলাফলে সাবেক মন্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ট্রাক প্রতীকে ৭০ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৫ ভোট।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের ১৩০টি কেন্দ্রের ফলাফলে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন ৭২ হাজার ২৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুন অর রশিদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৬৭ ভোট।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের ১৫৪টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী আহসানুল ইসলাম টিটু ১ লাখ ১২ হাজার ৬৮৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেক শামস হিমু পেয়েছেন ৩১ হাজার ২৯২ ভোট।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের ১২৭টি কেন্দ্রের ফলাফলে নৌকার প্রার্থী খান আহমেদ শুভ ৮৮ হাজার ৩৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পদত্যাগকারী উপজেলা চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ৫৭ হাজার ২৩১ ভোট।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে ১২৭টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফলে নৌকার প্রার্থী অনুপম শাজাহান জয় ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম গামছা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট।
টাঙ্গাইলের আটটি আসনে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। টাঙ্গাইল-৩, টাঙ্গাইল-৪, টাঙ্গাইল-৫ আসনের স্ব স্ব সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণায় গড়িমসি করেন। নানা নাটকীয়তার পর প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের চাপের মুখে সঠিক ফলাফল রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পাঠাতে বাধ্য হন।