পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় বিস্তৃত ফসলের মাঠজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। সেই ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ক্ষেতের পাশেই বসানো হয়েছে মধু বাক্স। মধু সংগ্রহের ফলে পরাগায়নে সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পাবে।এ অঞ্চলে লাভজনক উপায়ে সরিষা ক্ষেতের পাশে এমন পদ্ধতিতে মৌচাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে টরি-৭, বারি সরিষা-১৪, ১৭ ও ১৮ বিনা ৯ ও ১১ এবং রাই-৫ প্রজাতি মিলে মোট ৬ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।
উপজেলার ইউনিয়নগুলোর মাঠে সরিষা ক্ষেতের পাশে অর্ধশতাধিক মৌখামারি মৌচাষের বাক্স (মৌ খামার) স্থাপন করেছে।
\হজানা যায়, উপজেলায় স্থাপিত এসব মৌবাক্স খামার থেকে এ বছরে ৫ টনেরও অধিক মধু সংগ্রহ হবে। সরেজমিন খোঁজ-খবর নিতে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেল, হলুদ সরিষা ক্ষেতের পাশে সারি বেঁধে বসানো হয়েছে মৌচাষের বাক্স।
মৌচাষের বাক্স বসিয়েছেন ভাঙ্গুড়া উপজেলার কালিবাড়ী গ্রাম থেকে আসা 'সাজিদ অ্যান্ড সাদ' মৌখামারের মালিক মৃত আহম্মাদ আলী প্রামাণিকের পুত্র আব্দুস সালাম।
তিনি বলেন, প্রায় ১ যুগ ধরে চলনবিলের অভ্যন্তরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এসে মধু সংগ্রহ করছি। আমি প্রায় ১শ' বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছি। এখানে অনেক সরিষা ক্ষেতে ফুল ফোটেনি। তাই মধু উৎপাদন কিছুটা কম হচ্ছে। দুই সপ্তাহ পর মধু সংগ্রহ পুরোপুরি শুরু হবে। এখন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মধু ৩শ' থেকে সাড়ে ৩শ' টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র মধু চাষি জাহিদুল ইসলাম ভাঙ্গুড়া-নওগাঁ (তাড়াশ) সড়কের পাশে উপজেলার শ্রীপুর উত্তরপাড়া সরিষা মাঠে ১৪০টি বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। তিরি বলেন, প্রায় ২ সপ্তাহ আগে এখানে এসেছি। এ পর্যন্ত ৫ মণ মধু সংগ্রহ করেছি, আবহাওয়া ভালো হলে উৎপাদন বাড়বে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে আসা মধুচাষিরাও মধু চাষ করছেন। মধু চাষ করে একদিকে যেমন মৌচাষিরা লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে মৌমাছি সরিষার পরাগায়নে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে। ফলে সরিষার ফলনও প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যাবে। ঊর্ধ্বতন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রণজিৎ কুমার বর্মন জানান, সরিষা চাষে অনুকূল আবহাওয়া থাকলে প্রতি হেক্টর জমিতে ১ দশমিক ৭ মেট্রিক সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।