সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহার বিরুদ্ধে 'কাজের বিনিময়ে টাকা' (কাবিটা) প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
গত ৪ জানুয়ারি উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একাট্টা হয়ে জেলা প্রশাসক, সুনামগঞ্জ বরাবরে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদ্য বিদায়ী শান্তিগঞ্জ ইউএনও মো. আনোয়ার উজ-জামানের সঙ্গে থেকে এবং প্রশাসনের দিকনির্দেশনায় বিগত দুই বছর নিয়ম মাফিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কাবিটা প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পিআইসি গঠন ও বাঁধের কাজ বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করে আছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বর্তমান ইউএনও সুকান্ত সাহা প্রকল্পের কয়েকটি ইউনিয়নের গণশুনানি থেকে শুরু করে পিআইসি গঠন পর্যন্ত সব কার্যক্রমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি চেয়ারম্যানদের সম্পৃক্ত না করে সম্পূর্ণ এককভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছেন। এতে প্রকৃত কৃষক তার ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত হয়েছেন এবং অনেক মধ্যস্বত্বভোগীকে পিআইসিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইউএনওর এহেন কার্যক্রমে উপজেলার প্রকৃত কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাই ইউএনও কর্তৃক নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাবিটা প্রকল্পের গঠিত পিআইসি বাতিল করে প্রকৃত কৃষকদের নিয়ে নতুন করে পিআইসি গঠন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগে উলেস্নখ করেন।
উপজেলার পাথারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম, শিমুলবাক ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীন, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন, পূর্ব পাগলা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া, পূর্ব বীরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম, পশ্চিম পাগলা ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার, দরগাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান সুফি মিয়া, পশ্চিম বীরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুর জায়গীরদার খোকনসহ সবাই বলেন, চলতি বছর শান্তিগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়নে যেসব পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটিতে যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অধিকাংশ কৃষক নয়। তারা হাইব্রিড কৃষক। ইউপি চেয়ারম্যানরা স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি। তারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করেন। কিন্তু তাদের কোনো মতামত না নিয়েই ইউএনও একক সিদ্ধান্তে ফসল রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করেছেন। এতে আগামী দিনে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়নে ঝুঁকি ও শঙ্কা রয়েছে।
শান্তিগঞ্জ ইউএনও সুকান্ত সাহা বলেন, 'কী বিষয়ে অভিযোগ করেছে তা আমি নিজেও জানি না। পরে আমি জানতে পেরেছি। পিআইসি কমিটি গঠনে তাদের চাহিদা থাকতে পারে। তারা নির্দিষ্ট করে কোনো পিআইসির দাবি জানালে উপজেলা কমিটি বসে সেটা সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন।'
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, 'লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে নির্বাচনের পরেই বসব।'