শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার ৫০ একর জমিতে এ বছর রাইস ট্রান্সপস্নান্টার মেশিনের সাহায্যে আধুনিক পদ্ধতিতে সমলয় চাষাবাদে বোরো ধান রোপণ করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন চাষাবাদে খরচ কমছে কৃষকের, আবার অন্যদিকে বাড়বে ফলনও। এছাড়া কৃষি শ্রমিক সংকটের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে কৃষক ও দ্রম্নত সময়ে শেষ হবে চাষাবাদের কাজ।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার সময় উপজেলার নলমুড়ি ইউনিয়নের পাঁচকাঠি বস্নকে এই পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় গ্রামের শত শত কৃষক ও উৎসুক জনতা রোপণ পদ্ধতি দেখতে ভিড় করেন।
অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনের সঞ্চালনায় চারা রোপণের উদ্বোধন গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা জান্নাত তাহেরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রিপন চন্দ্র কর্মকার ও নলমুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান।
উপজেলার কৃষকরা জানান, এবার জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। গত বছর দেড় একর জমি রোপণে তাদের প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া কৃষি শ্রমিক পেতেও খুব কষ্ট হতো প্রতি বছর। এই মৌসুমে বিনামূল্যে ধান রোপণ করছেন। পরবর্তী মৌসুম থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ হবে এই পরিমাণ জমিনে ধানের চারা রোপণ করতে। কৃষি শ্রমিক খোঁজার হয়রানিও কমে যাবে।
একই গ্রামের কৃষক ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, আগে ধান রোপণে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। আজ ২০ মিনিটেই কৃষকের ৩০ শতাংশ জমির ধান রোপণ হয়ে গেছে।
ধান রোপণ যন্ত্রের পরিচালক আলমাস বলেন, প্রতি একর জমিতে ধান রোপণে মাত্র সাড়ে তিন লিটার ডিজেল খরচ হয়। একর প্রতি মাত্র তিন হাজার টাকার খরচ নেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল এ এলাকার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা। তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এখন তারা এ পদ্ধতিতে ধান চাষে আগ্রহী। এই মৌসুমে সবাইকে সুযোগ দিতে পারছেন না। এবার প্রণোদনার আওতায় থাকা ৮৫ জন কৃষক এই সুবিধা পাবেন। রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের সাহায্যে ৫০ একর জমি রোপণের উদ্দেশে ৪ হাজার ৫০০ ট্রেতে চারা উৎপাদন করা হয়েছে। সব জমি কমসূচির অর্থায়নে রোপণ এবং মৌসুম শেষে এসব জমির ধান কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কাটার ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলেন, রাইস ট্রান্সপস্নান্টারের সাহায্যে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ দিনের সঠিক বয়সের চারা রোপণ সম্ভব। ফলে ধানের জীবনকাল ১০ থেকে ১৫ দিন কমে আসে। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ৫০ একর জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হবে। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কমবে। সঙ্গে ফলন বাড়বে। এছাড়া পরিপক্ব ধান পেতে সময়ও কমে আসবে।