শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

পাহাড়ে চোখ ধাঁধানো হলুদ সাম্রাজ্য

স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি
  ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পাহাড়ে চোখ ধাঁধানো হলুদ সাম্রাজ্য

পৌষের শেষলগ্নে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মাঠঘাট সরিষার হলুদ ফুলে অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে। যেন চোখ ধাঁধানো হলুদ সাম্রাজ্য। মনে হচ্ছে প্রকৃতির গায়ে যেন হলুদ। এখন মাঠঘাট শুধুই হলুদের সমারোহ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সরিষা ফুলের ওপর খেলায় মাতোয়ারা বিভিন্ন প্রজাতির মৌমাছি, ভ্রমর, ফড়িংসহ নানা কীট-পতঙ্গ। সরষা ফুলের হলদে রং কয়েকশ' গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রকৃতির শোভা। হলুদ ফুলে যখন হাওয়া লাগে তখন ফুলগুলো মাতাল করা দোল দিয়ে হলুদ তরঙ্গের জোয়ারে পস্নাবিত করে প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়। ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে সঙ্গে রূপ বদল হয় প্রকৃতিরও।

এখন শীতকাল সরিষা ফুলের মৌসুম। এই যেন প্রকৃতির স্বর্গীয় আরেক রূপ। এই সময়ে প্রকৃতি পানে চোখ মেলে যদি কেউ একবার তাকায় সে প্রকৃতির প্রেমে পড়তে বাধ্য। প্রান্তরজুড়ে উষ্ণ হলুদ ফুলের তোড়া নিয়ে যেন প্রকৃতি আপনারই অপেক্ষায়।

প্রকৃতিপ্রেমীদের প্রাণ আকৃষ্ট করে নেয় দৃশ্য ও মুগ্ধতায়। প্রকৃতিপ্রেমীদের ভালোবাসার মাত্রা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দেয়। কুয়াশা ভেজা হাড় কাঁপানো শীতের সকাল কিংবা বিকাল বেলায় হলুদ ফুলের ডগায় ডগায় এবং পাপড়িজুড়ে ছোট ছোট শিশির কণাগুলো দেখতে অবিকল মুক্তোর মতো লাগে। তখন প্রকৃতি আরও আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করে কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমীদের।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ সর্বত্র মাঠে মাঠে হলুদ আভা ছড়িয়েছে সরিষা ক্ষেতগুলো। ক্রমেই সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। শীতের রিক্ততায় সরিষা ফুলের হলুদ রঙ যেন প্রাণের স্পন্দন নিয়ে আসে। শীতে সরিষা ক্ষেত গ্রাম-বাংলার রূপকে আরও বেশি অপরূপ করে তুলেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এই এলাকার বেশিরভাগ শস্য খেতেই এখন সরিষা চাষ করছেন। সরিষা গাছের হলুদ ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি।

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাংগা উপজেলার তবলছড়ি ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া এলাকার সরিষা চাষি শাহাবউদ্দিন, মফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন চাষিরা বলেন, ধান ও সবজির পাশাপাশি এখন প্রতি মৌসুমে সরিষা চাষ করি। এতে ভালোই লাভ হচ্ছে। তাদের ভাষ্যমতে, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি চার থেকে পাঁচ মণ সরিষা উৎপাদন সম্ভব। আর প্রতি মণ সরিষার মূল্য দুই থেকে তিন হাজার টাকা। মূলত সরিষা একটি তৈল বীজ জাতীয় অর্থকরী ফসল।

কৃষকরা নিজের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট ফসল বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে। সাধারণত বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। সরিষা ঝড়ে পরা পাতা ও ফুল থেকে জৈব সার তৈরি করা যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে