রাজধানী ফাঁকা, তবুও বায়ুদূষণে ৩ নম্বরে

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর

প্রকাশ | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়নসহ নানা কারণে বাড়ছে বায়ুদূষণ। সেই কবলে রোববার মেগাসিটি ঢাকা ছিল বিশ্বের ১০৯ দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে। ১৯৯ স্কোর নিয়ে রাজধানী ঢাকার বাতাস 'অস্বাস্থ্যকর' অবস্থায় ছিল। নির্বাচনকে উপলক্ষ করে লম্বা ছুটিতে ঢাকা ছেড়েছেন বহু মানুষ। ফলে রোববার রাজধানীতে যান চলাচল সীমিত রয়েছে। ভোটাররা গেছেন ভোট কেন্দ্রে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় কেউই বের হননি। তারপরও বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার এই স্কোর নির্ণীত হয়। একিউআই'র তথ্য অনুযায়ী, একই সময় ২৫৯ ও ২১৬ স্কোর নিয়ে ভারতের কলকাতা ও দিলিস্ন যথাক্রমে ছিল ১ ও ২ নম্বরে। ১৯১ ও ১৮৪ স্কোর নিয়ে চীনের হ্যাংজৌ ও উহান শহর যথাক্রমে ৪ ও ৬ নম্বরে। ৫ নম্বরে ছিল পাকিস্তানের করাচি। নেপালের কাঠমান্ডু আছে ৭ নম্বরে। এ শহরের স্কোর ছিল ১৭৬। ১৭৬, ১৭৫ ও ১৭০ স্কোর নিয়ে যথাক্রমে ৮ নম্বরে ভারতের মুম্বাই, ৯ নম্বরে উগান্ডার কম্পালা ও ১০ নম্বরে পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থান ছিল। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে 'অস্বাস্থ্যকর' বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনের ওপর ভিত্তি করে; যেমন- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তুকণা আছে, তা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) মানদন্ডের চেয়ে ৩৮ থেকে ৫০গুণ বেশি। জলবায়ু বিশ্লেষকদের মতে, ভৌগোলিক কারণে প্রতিবছর শীতের সময় ঢাকার বায়ুদূষণ বাড়লেও এবার শীত মৌসুম শুরুর বেশ আগে থেকেই রাজধানীর বাতাসে দূষণের পরিমাণ বেড়েছে। যে কারণে দূষণের দিক থেকে প্রায়ই শীর্ষে উঠে আসছে ঢাকার নাম। বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউ এয়ারের সূচকে গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ঢাকা একাধিকবার ৩০০'র বেশি একিউআই স্কোর নিয়ে সর্বোচ্চ দূষিতের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। নতুন বছরে এসেও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্যই ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর। বারবার দূষণের তালিকায় ঢাকার শীর্ষে চলে আসার পেছনে সুনির্দিষ্ট কিছু কারণকে চিহ্নিত করেছেন পরিবেশবাদীরা। তাদের মতে, বড় বড় প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলায় বায়ুদূষণ বাড়ছে। যে কোনো ধরনের নির্মাণকাজের সময় বায়ুদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে সেসব নিয়ম পালনের তোয়াক্কা করতে দেখা যায় না।