শেরপুরে টাকার জন্য নতুন বই থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা
প্রকাশ | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
সারা দেশে বই উৎসবে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত হলেও বগুড়ার শেরপুরে দোয়াল সাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পায়নি বই। ৭২০ টাকা স্কুলে না দেওয়ায় বই উৎসব থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের ওপর। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবি বছরের শুরুতেই অন্যদের মতো তারাও বই চায়, নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে চায়। কিন্তু শিক্ষকরা টাকার জন্য বই দিলেন না। গত বুধবার দুপুর ১২টায় ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে ঘোরাফেরা ও মাঠে খেলাধুলা করছে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সারা দেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক বছরের প্রথম দিনই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও দোয়াল সাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় বই উৎসব থেকে শিক্ষার্থীরা বই উৎসব থেকে বঞ্চিত। নতুন বই পেতে হলে সেশন ফি ৫শ' টাকা, বিদ্যালয় উন্নয়ন ফি একশ' টাকা, স্কাউট ফি ৫০ টাকা, ক্রীড়া উন্নয়ন ফি ৫০ টাকা, বিদু্যৎ বিল ২০ টাকা (প্রতি মাসে) মোট ৭২০ টাকা পরিশোধ করতে বলেছে কর্তৃপক্ষ। টাকা না দিলে শিক্ষার্থীদের নতুন বই দিতে নিষেধ করেছেন প্রধান শিক্ষক সুবাস চন্দ্র মাহাতো।
এ বিষয়ে বই না পাওয়া সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, 'বছরের প্রথম দিন দুইটি মাত্র বই পেয়েছি। স্কুলে এসে জানতে পারি ৭২০ টাকা না দিলে নতুন বই দেওয়া হচ্ছে না। তাই দুইটি বই নিয়ে বাড়িতে যেতে হয়েছে। আমরা জানি সরকার থেকে প্রথম দিনই সব বই আমাদের দেওয়ার কথা। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আমাদের সম্পূর্ণ বই দেয়নি এবং কস্নাসও নিচ্ছে না। তাই আমরা মাঠে ও বাহিরে ঘোরাফেরা করছি।'
অভিভাবক আব্দুস সালাম জানান, 'আমার মেয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সরকার থেকে বই পাওয়ার কথা থাকলেও টাকার জন্য আমার মেয়ে বই পায়নি। তাই স্কুলে এসেছি বিষয়টা জানার জন্য।'
এ বিষয়ে বছরের প্রথম দিন সরকারি নির্দেশ মোতাবেক শিক্ষার্থীদের বই না দেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুবাস চন্দ্র মাহাতো জানান, 'সেশন ফি, বিদ্যালয় উন্নয়ন ফি, স্কাউট ফি, ক্রীড়া উন্নয়ন ফি, বিদু্যৎ বিলসহ মোট ৭২০ টাকা না দেওয়ায় বই দেইনি। তবে গত বুধবার নিজ নিজ শ্রেণির শিক্ষকের কাছে টাকা জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ বই দেওয়া হবে না।'
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি বই না দিয়ে থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার হযরত আলী জানান, 'সরকারি নির্দেশ মোতাবেক সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়ার কথা। যদি বই না দেয় তাহলে এটা অন্যায় হয়েছে। তদন্ত করে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'