চৌদ্দগ্রামে নির্বাচন বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, আটক ২

স্থগিত ৭ কেন্দ্র, আহত ৫ তিন প্রার্থীর ভোট বর্জন

প্রকাশ | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

চৌদ্দগ্রাম (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে ভোট বর্জনের দাবিতে গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা -যাযাদি
কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে ভোট বর্জন ও মহাসড়ক অবরোধ এবং বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট বর্জনের ঘোষণা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী খোরশেদ আলম ও গণফোরামের প্রার্থী আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর। নির্বাচন বাতিলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমানের অনুসারীরা দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করে। এদিকে অনিয়মের কারণে ৭টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। তথ্যটি বিকালে নিশ্চিত করেছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ৮টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১২৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বেলা ১০টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রগুলোতে জাল ভোট প্রদান ও বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়ে কেন্দ্রগুলো নৌকার সমর্থকরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের সমর্থকদের সংঘর্ষে আমিনুল হক, জামাল হোসেন, বাবলু মোলস্না, মামুন ও কাজী ডালিমসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভোট কারচুপির অভিযোগে বেলা সাড়ে ১১টায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান (ফুলকপি), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী খোরশেদ আলম (মিনার) ও গণফোরামের প্রার্থী আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর (উদীয়মান সূর্য)। স্বতন্ত্র প্রার্থী আ'লীগ নেতা মিজানুর রহমান বলেন, সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে নৌকার প্রার্থীর লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে আমার ফুলকপি প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে নৌকাতে সিল মারে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একাধিকবার অভিযোগ করেও তার কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। আমি এ নির্বাচন বর্জন ঘোষণা করলাম। পাশাপাশি এ আসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। অন্যদিকে নির্বাচন বাতিলের দাবিতে মিজানুর রহমানের অনুসারীরা বেলা ১২টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলা কমপেস্নক্স এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ সময় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকটি টিম এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট সার্কেলের এএসপি জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'মহাসড়ক অবরাধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এ সময় অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করে।' সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান রোববার বিকালে বলেন, 'জাল ভোট দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন ইউনিয়নের ৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচনের অনিয়ম তুলে তিন প্রার্থী বর্জন করেছে। এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীরা মহাসড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সরিয়ে দেয়।