শীতের ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে আলু চাষের জমির পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন বগুড়ার নন্দীগ্রামের আলুচাষিরা। চলতি রবিশস্য মৌসুমে গতবারের তুলনায় এবার ৯৪২ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গতবার রবি মৌসুমে পৌরসভা এলাকাসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩শ' ৬৫ হেক্টর জমিতে। চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭শ' ৭ হেক্টর জমি। সেই তুলনায় এ বছর ৯৪২ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ করা হয়েছে। গত বছর আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫০ হাজার মেট্রিকটন। এবার চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮১ হাজার মেট্রিকটন। যা গতবারের তুলনায় বেশি। চাষিরা এবার কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, অ্যাসটিক, রোমানা, ও পাকড়িসহ দেশীয় বিভিন্ন জাতের আলুর চাষ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণসহ বিনামূল্যে রাসায়নিক সার যথাসময় বিতরণ করায় এ উপজেলার দ্ররিদ্র কৃষকদের আগাম জাতের আলু লাগানো সম্ভব হয়েছে।
উপজেলার ভাটগ্রাম, পোতা, মুরাদপুর, বুড়ইল, রিধইল, বর্ষণ, চাকলমা, সিংজানী, ডেরাহার, হাটলাল, হাটকড়ই, বীজরুল, বীরপলী, থালতা মাঝগ্রাম, গুলিয়া, চাপাপুর, হরিহারাসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে- গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, লালপাকরী ও দেশি জাতের আলু লাগিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। যথাযথভাবে চাষাবাদে আলু জমির পরিচর্যা করছেন চাষিরা।
উপজেলার বীরপলী গ্রামের গোলাপ হোসেন গতবার ৫০ বিঘা জমিতে ডায়মন্ড আলু চাষ করে বাম্পার ফলন ও দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় এবার তিনি ৮০ বিঘা জমিতে ডায়মন্ড আলুর চাষ করছেন। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জমিতে রোগবালাই আক্রমণ না করলে এ বছরও আলুর ফলন হবে দ্বিগুণ এমনটাই আশা তার। রিধইল গ্রামের আলু চাষি হাবিবুর, আব্দুল বাছেদ, দোহার গ্রামের তোতা, রফিক, ভাট গ্রামের গফফার জানান, যথাযথভাবে আলুর জমির যত্ন করা হচ্ছে। আশা করা যায় আলুর ফলন হবে দ্বিগুণ। কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিক পরিচর্যা ও সুষম সার ব্যবহারে গতবার আলু চাষ করে বাম্পার ফলনের পাশাপাশি দ্বিগুণ লাভ হয়েছিল। এবারও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে তারা আশাবাদী।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার গাজীউল হক জানান, সব ধরনের ফসল ভালোভাবে উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলায় বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ৯৪২ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। যথাসময় জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলু রোপণ করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে না হলে উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।